সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন
সুধা সদনের ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। সুধা সদনে খাবার
পানি সরবরাহ করার কারণে তার নাম হয় পানি জাহাঙ্গীর। পরে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে
তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রীর
ব্যক্তিগত কর্মচারী পরিচয় ব্যবহার করে তিনি প্রতারণার মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার মালিকসহ
গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে জানা যায়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরো বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে।
মানি লন্ডারিং আইনে তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলো অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে
জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডি জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত
কর্মচারী পরিচয় ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পদ, চাকরি নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেন জাহাঙ্গীর।
বাগিয়েছেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদ, গড়েছেন কোটি টকার অবৈধ
সম্পদ। এছাড়া গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি নোয়াখালী-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে
মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছিলেন।
সিআইডি বলছে, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায়
যে, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে রয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ। যার
মধ্যে ধানমন্ডিতে ২ হাজার ৩৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, ১টি গাড়ি, বিভিন্ন ব্যবসায় মূলধন
৭৩ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া যায়।
এছাড়া জাহাঙ্গীরের নিজের নামে তার এলাকায়
৪ কোটি টাকার কৃষি ও অকৃষি জমি, মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে দুটি দোকান, মিরপুরে ৭ তলা
ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট, গ্রামের বাড়িতে একতলা ভবন এবং চাটখিলে পৈতৃক ভিটায় চারতলা বাড়ি
রয়েছে মর্মে জানা যায়। তার পরিবারের একটি আটতলা বাড়ি রয়েছে নোয়াখালী শহর মাইজদীর হরিনারায়নপুর
এলাকায়, যার ১৯টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮টি ভাড়ায় দেয়া আছে বলে জানায় সিআইডি।
সিআইডি জানায়, অস্থাবর সম্পদ হিসেবে তার
নগদ ও ব্যাংক মিলিয়ে ২ কোটি ৫২ লাখ ২ হাজার ৪৩০ টাকা, ডিপিএস ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা,
এফডিআর ১ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬৮ টাকা এবং তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবের স্থিতি ২৭
লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৫ টাকা, ডিপিএস ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং অংশীদারি ফার্মে মূলধন ৬
কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার তথ্য পাওয়া যায়।
জাহাঙ্গীর আলম একে রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক ও হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছে বলেও জানতে পেরেছে সিআইডি।