নিম্নমুখী প্রবণতার দিকে ভারতের জনসংখ্যা

প্রকাশ: অক্টোবর ০১, ২০২৪

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পর দেশটিতে শূন্য থেকে ১৪ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রথমবারের মতো কমতে যাচ্ছে। আবার বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এ দেশে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় চলে গেছে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা। খবর দ্য হিন্দু।

এসবিআইয়ের ইকোনমিক রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট (ইআরডি) সংকলিত ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতে ২০২১ সালে তরুণ ও বয়স্কদের মাঝামাঝি (মেডিয়ান এইজ) জনগোষ্ঠীর গড় বয়স ছিল ২৪ বছর। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এমন জনগোষ্ঠীর গড় বয়স বেড়ে দাঁড়াতে পারে ২৮-২৯ বছরে। এসবিআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ সৌম্য কান্তি ঘোষ মনে করেন, ‘মেডিয়ান এইজের সূচকে চীনের তুলনায় ভারতের অবস্থা সন্তোষজনক।’

ইআরডি তথ্য-উপাত্ত বলছে, ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে মূলত দেশটির উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো। অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় জন্মহার বর্তমানে নিম্নমুখী।

ভারতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর (১৫-৫৯ বছর) সংখ্যা ১৯৭১ সাল থেকেই ঊর্ধ্বমুখী। ইআরডির প্রতিবেদন বলছে, এটা ২০৩১ সাল পর্যন্ত বাড়তে বাড়তে ৬৫ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। তবে ভারতের জনসংখ্যায় নতুন একটা প্রবণতা দেখা গেছে। সেটা হলো ২০১১ সালে দেশটিতে শূন্য থেকে ১৪ বছর বয়সী জনগোষ্ঠী ছিল মোট জনসংখ্যার ৩০ দশমিক ৯ শতাংশ। কিন্তু ২০২৪ সালে সেটা কমে দাঁড়াতে পারে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। ইআরডি বলছে, ১৯৭১ সালের পর এ বয়সী জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিল।

ইআরডি পূর্বাভাস দিয়েছে, দেশটিতে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২০২৪ সালে দাঁড়াতে পারে ১০ দশমিক ৭ শতাংশে। ২০৩১ সাল নাগাদ সেটা আরো বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৩ দশনিক ১ শতাংশে। দেশটিতে ২০২৪ সালে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১৫ কোটি অতিক্রম করতে পারে। এর মধ্যে নারী ৭ কোটি ৭০ লাখ ও পুরুষ ৭ কোটি ৩০ লাখ।

ভারতে নারীর সংখ্যাও বাড়ছে। ইআরডির হিসাবে, ২০২৪ সাল নাগাদ দেশটিতে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা (সর্বোচ্চ ৩৪ বছর হিসাবে) বেশি হবে। যদিও ২০১১ সালের চিত্র ছিল এর বিপরীত।

রাজ্যভিত্তিক হিসাবে দেখা গেছে, দেশটিতে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কেরালায় (১৬ দশমিক ৫ শতাংশ)। এর পরই আছে যথাক্রমে তামিলনাড়ু ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ, হিমাচল প্রদেশ ১৩ দশমিক ১, পাঞ্জাব ১২ দশমিক ৬ ও অন্ধ্র প্রদেশ ১২ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর হার সবচেয়ে কম বিহার রাজ্যে, ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এরপর আছে যথাক্রমে উত্তর প্রদেশ ৮ দশমিক ১ ও আসাম ৮ দশমিক ২ শতাংশ।

ইআরডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৫২ শতাংশের বাস দেশটির উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে। ২০১১ সালে এ হার ছিল ৫১ শতাংশ। যদিও অঞ্চলভিত্তিক মোট জনসংখ্যায় এককভাবে পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের হার গত দশকের তুলনায় কমে গেছে।

জনসংখ্যার হিসাব বলছে, ভারতে নগরায়ণ দ্রুতগতিতে বিস্তৃত হচ্ছে। ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, দেশটির মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৩১ দশমিক ১ শতাংশের বাস ছিল শহর অঞ্চলে। চলতি বছর তা বেড়ে ৩৫-৩৭ শতাংশে দাঁড়াতে পারে বলে আভাস দিয়েছে ইআরডি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বাইরে গোয়া ও কেরালায় সবচেয়ে বেশি নগরায়ণ ঘটেছে। এর পরই রয়েছে তামিলনাড়ু ও মহারাষ্ট্র। অন্যদিকে সবচেয়ে কম নগরায়ণের তালিকায় রয়েছে হিমাচল প্রদেশ, বিহার, আসাম ও ওড়িশা।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫