সংলাপে এম সাখাওয়াত হোসেন

পুলিশের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হয়নি ওরা আমাদের দেশের

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হয়নি যে ওরা আমাদের দেশের পুলিশ। পুলিশের বন্দুক কীভাবে সিভিল পোশাকের মানুষের হাতে গেল? ৭.৬২ রাইফেল তারা কোথায় পেল—এমন প্রশ্ন তুলেছেন নৌ-পরিবহন, বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

রাজধানীর রমনায় বিআইআইএসএস মিলনায়তনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের সংলাপে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। 

উপদেষ্টা বলেন, ‘নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নামের মধ্যে নৌ শব্দটি থাকায় এ মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে জাহাজ বন্দর মন্ত্রণালয় করার প্রস্তাব করা হবে। নৌকা থাকায় নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হবে। আমি নৌকা চালাই না, জাহাজ চালাই। এতদিন দায়িত্বে যারা ছিলেন তারা মন্ত্রণালয়গুলোকে চুরি ও দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছেন।’

এম সাখাওয়াত বলেন, ‘২০০৯-২৩ সাল পর্যন্ত দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২ হাজার ৬৯৯ জন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতন না হলে শেখ হাসিনা আরো তিন-চারদিন ক্ষমতায় থাকলে বহু লোকের স্থান হতো আয়নাঘরে। হাসিনার পতন না হলে আমিসহ আরো অনেকের আয়নঘরে থাকা লাগত। আমি নিজে আন্দোলনের সময় স্নাইপারের টার্গেটে ছিলাম। ৫ তারিখে বের হয়েছিলাম। আমাকে সতর্ক করা হলো আপনি বাসায় যান। কারণ আপনি স্নাইপারের লক্ষ্যবস্তুতে রয়েছেন। গত ১৫ বছর আমাকে সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি। এমনকি স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজেও ডাকা হয়নি।’

সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারে অভিযুক্তদের ফিরিয়ে আনার দরকার নেই। তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার করা উচিত। ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের মতো। হত্যার সব প্রমাণ আছে। নির্দেশদাতা হিসেবে বিচার হবে। অনেক রক্ত ঝরার পর একটা রাজনৈতিক দলের পরিণতি আমরা দেখলাম। তাদের কাজ নাৎসিদেরও হার মানায়। যিনি দেশ ছেড়ে চলে গেলেন, তিনি এখনো ভারতে বসে বলেন, উনি রক্তপাত বন্ধ করার জন্য চলে গেছেন। ওনার কোনো অনুশোচনা লাগে না। আমি প্রথম দিন থেকে বলছি, এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। যারা মারা যায়নি, তারা সারা জীবন অন্ধ হয়ে থাকবে, বিকলাঙ্গ হয়ে থাকবে; তাদের কথা চিন্তা করেন। ১৫-১৬-১৭ বছর বয়স। চিন্তা করেন তাদের ভবিষ্যৎ।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেয় ৬২৬ জন। আশ্রয় পাওয়াদের নামের তালিকা প্রকাশ বিষয়ে কেবিনেটে কথা হবে বলে জানিয়েছেন এ উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, ‘সরকার যদি আগামী এক মাসের মধ্যে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে তাহলে আরেকটি এক এগারো হবে। হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের উচিত রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা নেয়া। অন্য যারা এ আন্দোলনে যুক্ত ছিল তাদের সহযোগিতা নেয়া উচিত। সরকার বার বার বলছে, ছাত্ররা আমাদের এখানে বসিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো যে ভূমিকা নিয়েছে সেটি কোথাও তুলে ধরা হচ্ছে না।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫