প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে
জয়ী হওয়ার পথে নারী পরিচয়কে কমলা হ্যারিসের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখতে
পাচ্ছে আমেরিকানরা। আট বছর আগে হিলারি ক্লিনটন যখন প্রার্থী ছিলেন সে সময়ের
তুলনায় হ্যারিসের প্রতিবন্ধকতা আরো বেশি বলে আমেরিকানদের ধারণা। তারা আরো বিশ্বাস
করেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুরুষ পরিচয় তার জন্য ইতিবাচক হবে।
অ্যাসোসিয়েটেড
প্রেস-এনওআরসি পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চ সেন্টারের এক নতুন সমীক্ষা এ তথ্য
দেখিয়েছে। সেখানে বলা হয়, প্রথম এবং দ্বিতীয় নারী প্রার্থীর সময়ের মধ্যে
মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের মনোভাবের পরিবর্তন হয়েছে।
জরিপ অনুসারে, প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জন আমেরিকান মনে করেন, লৈঙ্গিক পরিচয়ের কারণে ভোটের মাঠে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন হ্যারিস। ২০১৬ সালের
প্রচারণার সময় হিলারি ক্লিনটনের লৈঙ্গিক পরিচয় নিয়ে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৩ জন একই
কথা বলেছিলেন।
মানসিকতার এই
পরিবর্তন বেশি দেখা গেছে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যেই, বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট পুরুষদের।
হিলারি ক্লিনটন নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার আগে প্রতি ১০ জন ডেমোক্র্যাট পুরুষের মধ্যে ৩ জন
মনে করতেন যে, নারী হওয়ায় হিলারি ক্লিনটন ‘কিছুটা’ বা ‘অনেকটা’ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
বর্তমানে প্রায় অর্ধেক ডেমোক্র্যাট পুরুষ হ্যারিস সম্পর্কে একই কথা বলছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার
৩৪ বছর বয়সী কপি এডিটর এবং লেখক হলেন জুলিয়ান জেং। এই ডেমোক্র্যাট সমর্থক বলেন, আমি
বলব এই দেশ নারীদের সমর্থন করার ক্ষেত্রে সত্যিই বিশেষ কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।
ডেমোক্র্যাট
নারীরাও এখন আরো বেশি বিশ্বাস করেন যে, প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর জন্য নারী হওয়াটা বাধা
সৃষ্টি করতে পারে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জন ডেমোক্র্যাট নারী মনে করেছিলেন যে, হিলারি
ক্লিনটনের লৈঙ্গিক পরিচয় তার ক্ষতির কারণ হবে। এখন প্রায় অর্ধেক নারীই একই কথা
বলছেন হ্যারিস সম্পর্কে। এ ইস্যুতে রিপাবলিকান পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি সামান্য
পরিবর্তিত হয়েছে, আর রিপাবলিকান নারীদের মতামত রয়েছে আগের মতোই।
আমেরিকানরা এখন
আরো বেশি বিশ্বাস করে যে, ট্রাম্পের পুরুষ হওয়া তার নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাকে
বাড়িয়ে তুলবে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জন মার্কিন প্রাপ্তবয়স্ক এখন মনে করেন,
পুরুষ পরিচয় ট্রাম্পের জন্য ইতিবাচক হবে। যা ২০১৬ সালের প্রচারণার সময় ছিল ১০
জনের মধ্যে ৩ জন।
উভয় প্রার্থী
তাদের প্রচারণায় লিঙ্গ নিয়ে যে দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন, সেসব বিষয় ও
বিতর্ককে এই সমীক্ষার ফলাফল আরো প্রভাবিত করতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। তবে নারী
হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়ার দিকটিকে যতটা তুলে
ধরেছিলেন হিলারি, তেমনটি করছেন না হ্যারিস। বরং, তিনি তার প্রচারণায় প্রজনন
অধিকারকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। পাশাপাশি, ট্রাম্পের মনোনীত তিনজন সুপ্রিম কোর্টের
বিচারপতির কথাও উল্লেখ করছেন হ্যারিস,
যারা গর্ভপাতের অধিকার বাতিলের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে,
দীর্ঘদিন ধরেই প্রচারণা সমাবেশে প্রবেশ এবং প্রস্থনের সময় আমেরিকান ফোক গান ‘ম্যাচো
ম্যান’ বাজানো পছন্দ করেন ট্রাম্প। তিনি বিভিন্নভাবে তরুণ পুরুষদের আকৃষ্ট করার
চেষ্টা করেছেন এবং মার্শাল আর্ট ইভেন্ট ও ফুটবল ম্যাচে উপস্থিত হয়ে নিজের
পুরুষতান্ত্রিক ভাবমূর্তিকে প্রচার করেছেন। সম্প্রতি অবশ্য তিনি নিজেকে নারীদের ‘রক্ষক’
হিসেবেও অভিহিত করা শুরু করেছেন।