রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন প্রবাসী
কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর)
দুপুরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে
ব্রিফিংকালে এসব পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তিনি।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ দেয়া হয়। আমরা
এখন এমন ব্যবস্থা করেছি যে এ ব্যাংকে এখন সরাসরি রেমিট্যান্স পাঠানো যাবে। যারা এই
ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন তারা সরাসরি রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন।
এ কাজে বেসরকারি সিটি ব্যাংকের সঙ্গে আমরা একটি সমঝোতা করেছি। যার ফলে প্রবাসী কল্যাণ
ব্যাংকে রেমিট্যান্স এনে ঋণ শোধ করতে পারবেন। এতে প্রবাসী কর্মীদের হয়রানি কমবে এবং
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে বলে আশা করছি। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের পাশাপাশি আরো ১২টি
ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা তাদের বলেছি যে প্রবাসীদের ঋণের প্রয়োজন আছে, আপনারাও
দিন। উনারা রাজি হয়েছেন, কিন্তু ক্রেডিট গ্যারান্টি লাগবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের
সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সচিবের কথা হয়েছে। আমি আশা করছি ক্রেডিট গ্যারান্টি অচিরেই পাওয়া
যাবে। এটি পাওয়া গেলে এ ১২টি ব্যাংক প্রবাসীদের ঋণ দিতে পারবে, যা আগে কখনো ছিল না।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের বুথ বাড়ানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রবাসী
কল্যাণ ব্যাংকের মূল শাখায় অনেক দূর দূরান্ত থেকে আসতে হয়। এজন্য আমরা যেসব এলাকায়
সোনালী এবং অগ্রণী ব্যাংক আছে ওই সব শাখায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের বুথ স্থাপনের জন্য
উদ্যোগ নিচ্ছি। বাড়তি কোনো টাকা ও জনবল খরচ না করে ওই দুই ব্যাংকের প্রত্যন্ত কিছু
জায়গায় এবং প্রবাসী অধ্যুষিত জায়গায় আমরা বুথ করার প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা আশাবাদী যে
এটা হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, প্রবাসী কর্মীরা প্রবাসে নানা ভোগান্তির শিকার হন। সেখানে
আমাদের দুতাবাসগুলোর ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করার অনেক অভিযোগ আসে। আমাদের শ্রম কল্যাণ
উইং আছে, তারপরও তারা ঠিকমতো কাজ করে না বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আসে। আমরা খুব শক্তভাবে
সেটা দেখার চেষ্টা করেছি। আমরা দুতাবাসে অবস্থিত শ্রম কল্যাণ উইংকে ফর্ম ছাপিয়ে পাঠিয়ে
দিচ্ছি। এখন থেকে তাদের কাছে কতগুলা অভিযোগ এল, অভিযোগকারীর নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর
এবং অভিযোগের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছে এটা আমাদের নিয়মিত রিপোর্ট করতে হবে। এখান থেকে
আমরা সরাসরি দৈবচয়ন ভিত্তিতে সেসব আমরা চেক করে দেখব যে ঠিকমতো কাজটি হচ্ছে নাকি। যদি
আমাদের প্রবাসী কল্যাণ উইংয়ের কেউ ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করে, সেবকের ভুমিকা নিয়ে
কাজ যদি না করে দরকার হলে আমরা সেখানে পরিবর্তন আনব। এখানে আমরা কোনো রকম ছাড় দেব না।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে আরো উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন,
প্রবাসীরা মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠান। আমরা ওই ১২টা বাণিজ্যিক ব্যাংকের
সঙ্গে কথা বলেছি, মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোতে তারা যে টাকাটা দেয়, সে টাকাটা এ দেশে
ওই ব্যাংক পরিশোধ করে দেবে। অর্থাৎ রেমিট্যান্স পাঠাতে বিদেশে যে টাকা দিতে হচ্ছে সেটি
এ দেশে ওই ব্যাংকে এলে পরিশোধ করে দেবে। এটা পুরোপুরি পালন করা যাবে কিনা আমরা কনফার্ম
না, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছি। উনি বলেছেন যথাসাধ্য চেষ্টা
করবেন, উনি সবকিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন। আমরা মনে করি এতে রেমিট্যান্স প্রবাহ
আরও বৃদ্ধি পাবে। সরাসরি রেমিট্যান্স পাঠাতে এবং হুন্ডিতে না পাঠাতে আমাদের প্রবাসী
কর্মীরা আরও অনুপ্রাণিত বোধ করবেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ওয়েজ আর্নার্স বন্ড কেনার ক্ষেত্রে এখন সর্বোচ্চ
সীমা হচ্ছে এক কোটি টাকা। আমরা সেটা বাতিল করার প্রস্তাব করেছি, এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের
সহায়তা লাগবে, আশা করছি বাংলাদেশ ব্যাংক করে দেবে। এতে করে আর কোনো ক্রয়সীমা থাকবে
না, বন্ডের মাধ্যমে আরো বেশি রেমিট্যান্স পাঠানো যাবে।