বাংলাদেশকে শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেবে চীন

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

রফতানি নিয়ে বাংলাদেশকে বড় সুখবর দিয়েছে চীন। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেবে বেইজিং। গতকাল ঢাকায় চীনা দূতাবাস এ তথ্য জা‌নিয়েছে। 

দূতাবাস জানিয়েছে, ৫ সেপ্টেম্বর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন‌পিং চীন-আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনে স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশগুলোকে শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেয়ার ঘোষণা দেন। আগামী ১ ডিডেম্বর থেকে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) পণ্য প্রবেশে শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাবে।

১২ সেপ্টেম্বর চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, চীনের রাষ্ট্রদূত আমাদের যেটি জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সিনো-আফ্রিকান যে শীর্ষ সম্মেলন হয়েছে সেখানে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে (এলডিসি) শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেবে চীন।

তিনি তখন আরো জানান, ২০২২ সালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন, তখন ৯৮ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা ছিল। সেটিকে এখন বাড়িয়ে শতভাগ করা হচ্ছে। 

বাংলাদেশের বড় বাণিজ্যিক অংশীদার বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক পরাশক্তি ও শীর্ষ রফতানিকারক দেশ চীন। দেশটি ২০১৫ সালে কয়েকটি স্বল্পোন্নত দেশে তাদের পণ্যের ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ট্যারিফ লাইনের আওতায় ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশী পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা কার্যকর করে। সবশেষ ২০২২ সালে আরো ১ শতাংশ বাড়িয়ে ৯৮ শতাংশ করা হয়। ট্যারিফ লাইনে আট হাজারেরও বেশি বাংলাদেশী পণ্য দেশটিতে শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে। যার মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যসহ ৩৮৩টি নতুন পণ্য ছিল।

তবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে, দুই দেশের মধ্যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশটিতে বাংলাদেশী পণ্য রফতানি হয়েছে মাত্র ৬৭৭ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন ডলারের।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম আমদানি বাজারে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর সেখান থেকে আমদানি হচ্ছে ২৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

চীন থেকে আমদানির উল্লেখযোগ্য অংশ শুল্কমুক্ত বন্ডেড ওয়্যারহাউজের মাধ্যমে আসে। কারণ সেগুলো রফতানি শিল্পে ব্যবহার করা হয়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীনে রফতানি না বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ পণ্য বহুমুখীকরণের অভাব। এছাড়া রয়েছে মার্কেটিং বা বিপণন ব্যবস্থার দুর্বলতা। ইউরোপে যুদ্ধ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের বিষয় বিবেচনায় চীন অভ্যন্তরীণ বাজারে মনোনিবেশ করেছে। তৈরি পোশাক উৎপাদনে তারা নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে। বাংলাদেশের শীর্ষ রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক দিয়ে চীনা বাজার ধরা কঠিন। তাই দেশটিতে রফতানি বাড়াতে প্রয়োজন রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণ।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫