সচিবালয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা

বৃহত্তর স্বার্থে ভারতে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৃহত্তর স্বার্থে ভারতে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এজন্য আমি বহু বাহবা পেয়েছি। এর মাধ্যমে কিছু বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যাবে।’ গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ভারতে ইলিশ মাছ রফতানি নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বলেছে—এটা তাদের সিদ্ধান্ত না। তাদের আপত্তি থাকার পরও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তারা যা-ই বলুক তিন হাজার টন রফতানির কথা বলা হয়েছে। আপনি দেখেন, ৫ লাখ ৩০ হাজার টন ইলিশ হয়। এটা চাঁদপুর ঘাটের একদিনেরও কম। আমাদের বন্ধু ও প্রতিবেশী দেশ। তিন হাজার টনও যাবে না। কারণ যারা বাইরে বিক্রি করবে, রফতানি করবে তারা দেখবে ১ হাজার ২০০ টাকার ইলিশ ওখানে ৫ ডলার দেবে না, এটা জানা কথা। আপনারা দেখেন এপেক্সের জুতা ৬ হাজার টাকা বিক্রি করে, ওরা বাইরে রফতানি করে না। ৫-১০ ডলার দিয়ে কেন এক্সপোর্ট করবে। এগুলো যারা ইমোশনাল কথাবার্তা বলে, ঠিক আছে বলুক। এটা জিরো পয়েন্ট ৫ পার্সেন্টও না। ১ পার্সেন্টের নিচে।’ 

উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমাদের বাণিজ্যিক দিক দিয়েও সুবিধা আছে। রফতানি করলে বৈদেশিক মুদ্রা পাব কিছু। এমনিতে চোরাচালান হয়ে চলে যাচ্ছে এদিক, সেদিক থেকে। অতএব ঠিক আছে, তারা বলুক। এটা আমি নিশ্চিত করছি অনেক বিবেচনা করে এবং এজন্য আমি বহু বাহবা পেয়েছি। অনেক জায়গা থেকে বলা হয়েছে ভালো ডিসিশন।’

এতে দাম বেড়ে যাওয়ায় কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দাম তো এমনিই বাড়ায় ব্যবসায়ীরা। এটার জন্য বাড়বে কেন? যা-ই হোক আমি মনে করি ডিসিশন হয়েছে বৃহত্তর স্বার্থে। কিছু লোকের অসুবিধা হবে। কিন্তু আমি মনে করি না এটা বিরাট ক্ষতিকারক। আমরা প্রতিবেশী হিসেবে থাকতে চাই। ওদের পেঁয়াজ আসছে না সস্তা দরে। তাহলে মানা করে দেন তাদের পেঁয়াজ খাবেন না। এগুলো ইমোশনাল কথাবার্তা বলে লাভ আছে। ওরা পেঁয়াজের ডিউটি কমিয়ে দিয়েছে। পেঁয়াজ তো আসতেছে।’ 

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপাই, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ুং সিক এবং ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টের (ইফাদ) কান্ট্রি ডিরেক্টর ভ্যালেন্টাইন আচানচোর সঙ্গে গতকাল সচিবালয়ে ড. সালেহউদ্দিনের বৈঠক হয়েছে। 

এসব বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আইএমএফের প্রতিনিধি এসেছিলেন। সামনে আইএমএফের একটি মিশন আসবে। সেটার প্রস্তুতির বিষয়ে কতজন আসবে, কী করবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত দেখা করেছেন। আমাদের বেশকিছু বড় প্রকল্প রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে। প্রযুক্তি ও মানের দিক থেকে কোরিয়ার পণ্য কিন্তু ভালো। তাদের ঋণের সুদের হার দশমিক ৫ শতাংশ এবং ৪০ বছর মেয়াদ। তারা আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলকভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে। নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে ওরা কাজ পেতে আগ্রহী না। সামনে আরো কিছু বড় প্রকল্পে কোরিয়া আগ্রহ দেখিয়েছে।’ 

ফরাসি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘কারিগরি খাতে ফ্রান্সের দক্ষতা রয়েছে, যেমন তথ্যপ্রযুক্তি। তারা আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা দেবে। তাদের দেখে অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোও এগিয়ে আসবে।’

ইফাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইফাদ অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশের কৃষি, বিভিন্ন প্রকল্প, ক্ষুদ্র ঋণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়তা করে আসছে।’ 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫