সামুদ্রিক নিরাপত্তা সম্প্রসারণে সম্মত কোয়াড নেতারা

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪

বণিক বার্তা ডেস্ক

এশিয়ার বাণিজ্য সমৃদ্ধ জলসীমায় যৌথ সামুদ্রিক নিরাপত্তা পদক্ষেপ সম্প্রসারণে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও জাপানের সমন্বয়ে গঠিত কোয়াড জোট। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিজ শহর ডেলওয়ারের উইলমিংটনে স্থানীয় সময় শনিবার কোয়াডের এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে চার দেশের শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে সম্মত হন। 

সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজ। বাইডেন কোয়াড বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি কোয়াডকে পররাষ্ট্রনীতির উল্লেখযোগ্য অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেন।

কোয়াড নেতারা আগামী বছর সমুদ্রে যৌথ অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেন। অভিযানে অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের কর্মকর্তারা মার্কিন উপকূলরক্ষী জাহাজে একসঙ্গে কাজ করবে। এ চার দেশের সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে অভিযান ঠিক কোথায় পরিচালিত হবে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। পাশাপাশি দুই বছর আগে চালু হওয়া ইন্দো-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ ফর মেরিটাইম ডোমেইন অ্যাওয়ারনেস সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও করেন নেতারা।

মূলত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের আধিপত্যের বিপরীতে এ জোটের শুরু। যদিও হোয়াইট হাউজ বলেছে, কোয়াড সম্মেলন নির্দিষ্ট কোনো দেশকে লক্ষ্য করে নয়। চীন বরাবরই কোয়াড গ্রুপের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে। বেইজিং চীনকে বিচ্ছিন্ন করা ও এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ানোর কৌশল হিসেবে এ জোটকে দেখছে। এবারের সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিতে নেতারা ‘দক্ষিণ চীন সাগরে জবরদস্তিমূলক ও ভীতি প্রদর্শনমূলক তৎপরতার’ নিন্দা জানান।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন সামুদ্রিক নিরাপত্তা উদ্যোগ বেইজিংকে একটি বার্তা দেবে। এতে নিরাপত্তা ইস্যুতে কোয়াডের কার্যক্রমের গুরুত্ব আরো জোরদার হবে।

বাইডেন বলেন, ‘চীন কর্মপদ্ধতির ধরন পরিবর্তন করছে, মূল লক্ষ্য নয়। আমরা বিশ্বাস করি শি জিনপিং চীনের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের দিকে মনোনিবেশ করতে ও কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন কমাতে চেষ্টা করছেন। আমার মতে, তিনি চীনের স্বার্থ আক্রমণাত্মকভাবে অনুসরণ করার লক্ষ্যে কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে চাচ্ছেন।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় পুরো দক্ষিণ চীন সাগর অঞ্চল নিজেদের দাবি করে থাকে চীন। এর মধ্যে সেসব অঞ্চলও রয়েছে, যেগুলো ফিলিপাইন, ব্রুনেই, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামও নিজেদের বলে দাবি করে। জাপান ও তাইওয়ানের বিরোধপূর্ণ পূর্ব চীন সাগরের অঞ্চলগুলোও নিজেদের বলে দাবি করে দেশটি। গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে মনে করে বেইজিং।

কোয়াড নেতাদের যৌথ বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও ‘ক্ষতিকর সাইবার কার্যকলাপের’ কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে।

বিশ্লেষক ও কর্মকর্তারা মনে করছেন, নিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কোয়াডকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাইডেন সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা আগামী সপ্তাহে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। ফলে জাপানও নতুন প্রধানমন্ত্রী পেতে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ায় আগামী বছর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জোটের তিন সদস্য দেশে নতুন নেতৃত্ব আসতে যাচ্ছে। 

ফলে সামনে কোয়াড গ্রুপ টিকে থাকবে কিনা, সে প্রশ্নও উঠেছে। এ বিষয়ে মোদির এক প্রশ্নে বাইডেন তার কাঁধে হাত রেখে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, ‘এ গ্রুপ টিকবে। আগামী বছর কোয়াড সম্মেলন ভারতে অনুষ্ঠিত হবে।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫