পাহাড়ের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির বর্ণনা দিল আইএসপিআর

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বলেছে, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে যে উত্তেজনা চলছে, তা তিন পার্বত্য জেলায় ভয়াবহ দাঙ্গায় রূপ নিতে পারে। এজন্য শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সর্বসাধারণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বার্তা দেয় আইএসপিআর। এতে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির বর্ণনাও তুলে ধরা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বুধবার মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল জনগণের পিটুনিতে মো. মামুন নামের এক যুবক নিহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিকালে দীঘিনালা কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। দীঘিনালার বোয়ালখালী বাজার অতিক্রম করার সময় ইউপিডিএফের (মূল) কিছু সন্ত্রাসী মিছিল লক্ষ্য করে ২০-৩০টি গুলি ছোড়ে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ জনতা বোয়ালখালী বাজারের কয়েকটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা, পানছড়ি ও আশপাশ এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে ক্রমেই পরিস্থিতিকে আরো উত্তেজনাকর করে তোলে। দ্রুততার সঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে জরুরি ভার্চুয়াল সভা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, দীঘিনালা ও পানছড়িসহ সব উপজেলায় যৌথভাবে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে টহল দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।’

বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি শহরে গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন নিহত হয়। তিনজনের মৃত্যুর প্রসঙ্গে আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘খাগড়াছড়ি জোনের একটি টহল দল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় এক মুমূর্ষু রোগীকে স্থানান্তরের সময় শহরের স্বনির্ভর এলাকায় পৌঁছালে উত্তেজিত জনসাধারণ ইউপিডিএফের (মূল) নেতৃত্বে বাধা সৃষ্টি করে। একসময় ইউপিডিএফের সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর টহল দলের সদস্যদের ওপর গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালায়। ওই গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয় বলে জানা যায়।’

গতকাল রাঙ্গামাটিতে পাহাড়িদের সঙ্গে বাঙালিদের সংঘর্ষ হয়। এ সম্পর্কে আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সকালে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের “‍সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন” ব্যানারে জিমনেশিয়াম এলাকায় সমবেত হয় স্থানীয় জনসাধারণ। এ সময় ৮০০-১০০০ উত্তেজিত জনসাধারণ মিছিল বের করে বনরূপা এলাকার দিকে অগ্রসর হয়। তারা বনরূপা বাজার মসজিদ, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এবং বেশকিছু দোকানে ভাংচুর ও আগুন দেয়। এতে উভয় পক্ষের বেশকিছু লোকজন আহত হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে রাঙ্গামাটি জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।’

আইএসপিআর আশঙ্কা করছে, উল্লিখিত ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে তিন পার্বত্য জেলায় ভয়াবহ দাঙ্গা দেখা দিতে পারে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘অনতিবিলম্বে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের চলমান উত্তেজনা প্রশমনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। যথাযথ তদন্ত কার্যক্রম সম্পাদনের মাধ্যমে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শনাক্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিন পার্বত্য জেলায় শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সর্বসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫