বরিশাল
সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) বকেয়া বিদ্যুৎ বিল রয়েছে ৬৩ কোটি ৪৫
লাখ ৬১ হাজার ৮০৯
টাকা। দীর্ঘ সময় পরও বিল পরিশোধে তেমন কোনো উদ্যোগও নিচ্ছে সিটি কর্তৃপক্ষ। নতুন করে বকেয়া ঠেকাতে এবার প্রিপেইড মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)।
বরিশাল সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বিসিসির কাছে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল রয়েছে ৬৩ কোটি ৪৫ লাখ ৬১ হাজার ৮০৯ টাকা। সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য মন্ত্রণালয়ে থোক বরাদ্দ চেয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে সরকার পতনের কারণে বকেয়া বিল পরিশোধ সম্ভব হয়নি। নগরীর পানির সংযোগ, সড়কবাতি, বিভিন্ন স্থাপনা ও পার্কে এ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। দিনে দিনে বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ বাড়ায় বাড়তি চাপে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করা হলে সিটি করপোরেশনের পানির সংযোগ, সড়ক বাতি বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে।
এর আগে বিসিসির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর সময়ে ৬০ কোটি ৮১ লাখ টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল থাকায় প্রথমে নগরীর ৫৮টি সড়কের বিদ্যুৎ লাইন কাটা হয়েছিল। ওই সময় বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের মধ্যস্থতায় সিটি করপোরেশন ও ওজোপাডিকোর মধ্যে সমঝোতা হয়। পরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়।
ওজোপাডিকো-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘বিসিসি প্রতি মাসেই কম-বেশি বিদ্যুৎ বিল দেয়। তবে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের ব্যাপারে বিসিসিকে চিঠি দেয়া হলে থোক বরাদ্দ পেলে পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছে।’
জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১১২টি বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। যার অনুকূলে সাবেক মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেন হিরনের সময়কালে অর্থাৎ ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত ২০ কোটি ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার ১৫ টাকা বকেয়া ছিল। তবে বকেয়ার ১ টাকাও পরিশোধ করেননি। এরপর ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সাবেক মেয়র প্রয়াত আহসান হাবিব কামালের মেয়াদকালে নতুন ২১ কোটি ৭৪ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৯ টাকা নিয়ে বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪২ কোটি ১১ লাখ ২৯ হাজার ৮৮ টাকা। যদিও ওই পরিষদ ১ কোটি ৩৩ লাখ ২৮ হাজার ১২২ কোটি টাকা পরিশোধ করে। ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর আমলে নতুন বকেয়া বিল ৫৭ কোটি ১৯ লাখ ৭৭ হাজার ১৪৯ টাকা। তবে সে সময় ১ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার ২০৭ টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছিল।
ওজোপাডিকো-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঞ্জিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিসিসির সাবেক মেয়রের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেখা করেছিলেন। তারা বকেয়া বিল পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা বিল পরিশোধ করেননি। আর যেন বকেয়া বিল না হয়, এজন্য বরিশাল সিটি করপোরেশনের বিদ্যুৎ সংযোগগুলোয় প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে। বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য প্রয়োজনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।’
এ ব্যাপারে জানতে সিটি করপোরেশনের সদ্য বদলি হওয়া প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম. ইসরাইল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে এ বিষয়ে তিনি এখন কোনো বক্তব্য দেবেন না বলে জানান।