শিল্পীদের মধ্যে কোনো বিভাজন আমি চাই না

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

ঢাকাই চলচ্চিত্রে তিন দশকের ক্যারিয়ারে সুরের মূর্ছনা ছড়িয়ে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। অসংখ্য গানের জনপ্রিয় শিল্পী তিনি। বহু জনপ্রিয় গান উপহার দিয়ে শ্রোতাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন কনকচাঁপা। সদ্যনির্বাচিত শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অন্যান্য বিষয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অহিদুর রহমান

শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, আপনার অনুভূতি কী?

যারা কাজ করতে ভালোবাসে, তাদের দায়িত্ব পেলে ভালো লাগে। আমিও তার বাইরে নই। এটা খুব বড় একটা দায়িত্ব। যদিও একটা অজানা ভয় কাজ করে, কারণ ধরনের কাজ আগে কখনো করিনি। তবে আমার যথেষ্ট বিশ্বাস আছে, তারা নিশ্চয়ই আমার ওপর আস্থা রেখেই আমাকে নির্বাচন করেছেন। তাই আমি বিশ্বাস করি, সবার দোয়ায় আমি কোনো অন্যায় করব না।

পদে আপনাকে নির্বাচন করার আগে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল?

আমাকে শুধু একজন ফোন দিয়ে অনুমতি নিলেন যে আমি রাজি আছি কিনা। অনুমতি দেয়ার পর প্রজ্ঞাপন জারি করে আমাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

আগামীতে শিল্পীদের কল্যাণে কী কাজ করবেন?

শিল্পী মানে প্রান্তিকশিল্পী, আদিবাসীশিল্পী, রাস্তায় যিনি বাঁশি বাজান তিনিও শিল্পী, নৃত্যশিল্পী, অভিনয়শিল্পী, গানের শিল্পী, যাত্রাশিল্পী, বাউলশিল্পী, যন্ত্রশিল্পী সব শিল্পীর দিকেই দৃষ্টি দেয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। যদিও সেটা কাজের একটা বড় পরিধি। আমাকে কতটা পরিধির অধিকার দেয়া হবে সেটার ওপর নির্ভর করে। আমি যদি পুরো স্বাধীনতা পাই, তখন আমিশিল্পীদের সহায়তা বা কল্যাণ এমন না বলে শিল্পীদের সঙ্গে থাকতে চাই।

একসময় জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন, মাঝখানে দীর্ঘ বিরতি। আবারো নতুন কনকচাঁপাকে শ্রোতারা দেখতে পাবে কি?

সব শিল্পীরই একটা নিজস্ব সময় থাকে। আমার মনে হয়, আমি আমার সে সময় পার করে এসেছি। আমি কখনো ফাঁকা বুলিতে বিশ্বাস করি না, ফাঁকা বুলি উচ্চারণও করি না। আমি আজীবন গান গাইব। তবে মাঝখানে সাত বছর আমার অপচয় হয়েছে। সাত বছর আমি অনেক গান গাইতে পারতাম। এখন আমার সঙ্গে যারা গান করছেন বা যে মিউজিক ডিরেক্টর আছেন, তারা আমার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না বা আমি তাদের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছি না। তারা হয়তো আমাকে চেনেই না, রকম ব্যাপারও হতে পারে। আমি যাদের গান গেয়েছি, তাদের অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন, আবার কেউ হয়তো দেশের বাইরে আছেন। আসলে আমার পুরো গানের জগৎটাই পেছনে চলে গেছে।

এখনো শ্রোতাদের মুখে মুখে আপনার গান শোনা যায়। আবারো কি শুরু করা যায় না?

এটা তো থাকেই। তার মানে এই না যে চলমান কাজের মাধ্যমেই শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিতে হবে। শিল্পীদের জানতে হয় যে কোথায় থামতে হবে। থামার যে একটা সীমা, জ্ঞান শিল্পীর না থাকলে তিনি যখন গান করেন, তখন মানুষ বলে যে তিনি কেন গান করছেন। আমি একদম চাই না যে একটা মানুষ আমাকে বলুক যেতিনি কেন এখনো গান গাইছেন। তিনি গান গাইতে পারেন না, তার পরও জোর করে কেন গাইছেন। কথা আমি শুনতে চাই না। তাই আমি এখানেই থেমেছি।

শিল্পীদের বিভাজন নিয়ে আপনার মতামত কী?

শিল্পীদের মধ্যে যদি কেউ বিভাজন করে করুক। আমি কোনো বিভাজন করব না। শিল্পীদের মধ্যে কোনো বিভাজন আমি চাই না। আমার শব্দ ভাণ্ডারে প্রতিশোধ বলে কোনো শব্দ নেই। আমার সঙ্গে যা হয়েছে অন্যদের সঙ্গে তাই হোক, এমন ভাবনা আমার পরিবার আমাকে শেখায়নি। শিল্পীদের বিভাজন করা উচিত নয়। শিল্পী তো একটা দেশের শক্তি। শিল্পী তো এমনি এমনি প্রতি বছর জন্মায় না। অনেক প্রতিভাধর শিল্পী আছেন, তারা যেকোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের হতেই পারেন। আমাকে যেভাবে আটকে রাখা হয়েছিল এভাবে কাউকে আটকে রাখা হোক, এটা আমি কখনো চাইব না।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫