কুড়িগ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে নদীভাঙন রোধের চেষ্টা গ্রামবাসীর

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে ভাঙন রোধে সরকারি কোনো উদ্যোগ না থাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন গ্রামবাসী। তাদের অভিযোগ, বারবার সরকারি দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো সারা পাননি তারা। অবস্থায় নিজেদের চাঁদার টাকায় প্লাস্টিকের বস্তুা কিনে বালু ভরিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমারের শাখা কালজানি নদীপাড়ের বাসিন্দারা।


সরেজমিনে দেখা গেছে, কেউ প্লাস্টিকের বস্তুায় ভরছেন বালু, কেউ ফেলছেন নদীর পাড়ে। এভাবে ঘর বাড়ি ফসলি জমি রক্ষার চেষ্টা করছেন ভাঙন কবলিত এলাকার বিভিন্ন বয়সের মানুষ। 


স্থানীয়রা জানান, গত মাস ধরে দুধকুমার নদের অব্যাহত ভাঙন চলছে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সীমান্তবর্তী শিলখুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ধলডাঙ্গা গ্রামে। এরই মধ্যে বিলীন হয়েছে তিন শতাধিক ঘর-বাড়িসহ একরের পর একর ফসলি জমি। অবস্থায় ভাঙন কবলিতরা জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডে বারবার যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। পরে কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে নিজেদের অর্থ দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন রোধ করে সম্পদ রক্ষার চেষ্টা করছেন তারা।


স্থানীয়দের দাবি, তাদের চেষ্টার পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামান্য সহযোগিতা পেলে বন্ধ হবে ভাঙন। আর এতেই রক্ষা পাবে ফসিল জমিসহ ঘর-বাড়ি। 


উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ধলডাঙ্গা এলাকার মোমেন মিয়া বলেন, আমাদের এলাকার ভাঙন রোধে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে আমরা নিজেরাই কাজ করছি। গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে প্লাস্টিকের বস্তুা কিনে বালু ভরে নদীতে ফেলছি। তারপরও ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না।


একই এলাকার আরেক বাসিন্দা মনছের বলেন, নিজেদের ঘর-বাড়িসহ ফসলী জমি রক্ষার জন্য আমরা নিজেরাই চেষ্টা করছি।তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু বস্তা দিলে ভালো হত।


এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া সীমান্তবাসীর জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান একেএম ফরিদুল হক বলেন, এই এলাকার দুধকুমার নদ গত প্রায় মাস ধরে ভাঙছে। প্রায় ৩শর ওপর বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। কয়েকশো হেক্টর ফসিল জমি ফসলসহ নদে চলে গেছে। ভাঙন রোধ করা না হলে সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হবে।


কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান শিলখুড়ি এলাকায় দুধকুমারের ভাঙনসহ অন্যন্য নদ নদীতেও ভাঙনের কথা স্বীকার করে জানান, বরাদ্দ কিংবা অনুমতি না থাকায় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না তারা। সার্বিকভাবে কৃষি জমি সামান্য বাড়ি-ঘরের জন্য কাজ করার অনুমতি পাচ্ছেন না। সরকারি কোনো স্থাপনা হলে কিছুটা কাজের অনুমতি পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি।


জেলায় গত চার মাসে দুধকুমারসহ ব্রহ্মপুত্র, ধরলা তিস্তার ভাঙনে বসতভিটা ফসলি জমি হারিয়েছে সহস্রাধিক পরিবার। ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নিবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা ভুক্তভোগীদের।

 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫