স্কয়ার ফুডের কারখানায় নারীদের অগ্রাধিকার

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয় স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও স্কয়ার টয়লেট্রিজের হাত ধরে। একই প্রাঙ্গণ ও শ্রমশক্তির সুবিধা থাকায় কোনো চ্যালেঞ্জ ছাড়াই স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কার্যক্রম শুরু হয়। শ্রমশক্তির বিষয়ে উদ্যোক্তারা পাবনা শহরের দক্ষ জনবল ও মহিলা কর্মীদের বিশেষ প্রাধান্য দেয়। ফলে সহজলভ্য শ্রমশক্তির মাধ্যমে স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি. দ্রুত কার্যক্রম শুরু করতে সক্ষম হয়। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল খাঁটি ও মানসম্পন্ন পণ্য মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে তেমন কোনো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়নি। তাই কারখানা স্থাপনে কঠিন কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। মূলত স্কয়ার টয়লেট্রিজ ও স্কয়ার ফার্মা থেকে ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরীর হাত ধরে কারখানাটি চালু হয়। যেখানে এখন পর্যন্ত দেড় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।

বর্তমানে কারখানায় পণ্যের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন ইউনিট চলমান। ইউনিটগুলো হলো:

১. চানাচুর ও স্ন্যাকস লাইন

২. পিকেল ও চাটনি লাইন

৩. রেডিমিক্স মসলা লাইন

৪. নুডলস উৎপাদন লাইন

৫. বেসিক মসলা উৎপাদন লাইন

৬. শষ্যপণ্য উৎপাদন লাইন

৭. সরিষার তৈল উৎপাদন লাইন

প্রতিটি ইউনিটেই রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও কিছু ক্ষেত্রে সেমি-অটোমেটেড প্রডাকশন প্রসেস। এছাড়া প্রতিটি ইউনিটে রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির অটোমেটেড প্যাকেজিং মেশিন। মেশিনগুলো সাধারণত চায়না, ভারত, তাইওয়ান থেকে আনা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠাকালে এ কারখানার আকার ছিল আনুমানিক দুই-তিন একর। শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৩৯। বর্তমানে কারখানায় প্রায় দুই হাজার কর্মী কর্মরত আছে যার ৬০ শতাংশের ওপরে নারী কর্মী। মৌসুমভেদে এ সংখ্যায় তারতম্য হয়। সব শ্রমিক দেশের শ্রম আইন অনুসারে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। স্কয়ারের কারখানায় কোনো বিদেশী কর্মচারী বা প্রকৌশলী নেই, সম্পূর্ণ বাংলাদেশীদের তত্ত্বাবধানে এ কারখানা পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি নারীকর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়ার ফলে স্থানীয় নারীদের কর্মসংস্থানে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের কারখানা।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত কারখানা সম্প্রসারণ হয়ে প্রায় দ্বিগুণ আকার লাভ করেছে। শিগগিরই স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি. নতুন ঠিকানায় সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন কারখানা হিসেবে স্থানান্তর হতে যাচ্ছে। স্কয়ারের পণ্যের গুণগত মানের স্বীকৃতিস্বরূপ তারা ISO 9001:2000, ISO 22000 সহ USFDA-এর সার্টিফিকেশন পেয়েছে।

বর্তমানে বাজারে স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের পাঁচটি সুপরিচিত ব্র্যান্ড রয়েছে। ব্র্যান্ডগুলো হলো রাঁধুনি, রুচি, চাষী, চপস্টিক ও আরাম। রাঁধুনি, রান্নাসংক্রান্ত সর্বোত্তম সহায়তা প্রদানে প্রয়োজনীয় মসলার ব্র্যান্ড, যাকে মূলত স্কয়ারের ফ্ল্যাগশিপ ব্র্যান্ড হিসেবে ধরা হয়। রুচি তরুণদের উদ্দেশ্যে বাজারজাত করা ব্র্যান্ড, যা চানাচুর ও এ-জাতীয় স্ন্যাকস অফার করে। চাষী সুগন্ধি চাল সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ভোক্তার দোরগোড়ায় উন্নত মানের চাল পৌঁছে দেয়। চপস্টিক বাংলাদেশের প্রথম টেস্টিং সল্ট মুক্ত ইনস্ট্যান্ট নুডলস, যা শিশু ও স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরির উদ্দেশ্যে তৈরি। অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক নতুন ব্র্যান্ড আরামের মাধ্যমে প্রাকৃতিক স্বাদ ও শতভাগ বিশুদ্ধতা রক্ষা করে ভোক্তাদের জন্য ফলের রস বাজারজাত করা হচ্ছে।

ব্র্যান্ডগুলোর মাঝে রাঁধুনি ব্র্যান্ডের গুঁড়া মসলা, সরিষার তেল ও রুচি ব্র্যান্ডের চানাচুর সবচেয়ে জনপ্রিয়। ধারাবাহিকভাবে মান রক্ষা করে যাওয়ার ফলে এসব পণ্য প্রায় ৩৫টি দেশে নিয়মিত রফতানিও হচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় স্কয়ারের পণ্যের ব্যাপক চাহিদা। এছাড়া ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, আমেরিকা, আফ্রিকার দেশগুলোয় স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের পণ্য রফতানি করা হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশে এফএমসিজি (FMCG) পণ্যের মাঝে ফুড ও বেভারেজ পণ্যের বাজারের আকার প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা। এর মাঝে স্কয়ার ফুডের ব্যবসার আকার প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা, যা তাদের বৃহৎ কোম্পানির কাতারে নিয়ে এসেছে। স্কয়ারের ভোক্তাপ্রিয় ব্র্যান্ড রাঁধুনি, রুচি, চাষীর অধিকাংশ পণ্যসমূহ বত্যমানে বাজারে শীর্ষস্থান দখল করে আছে


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫