যুক্তরাজ্যের অনেক দরিদ্র পরিবারে ঘুমানোর বিছানাও নেই

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের দরিদ্র পরিবারগুলো বেশ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবন পার করছে বলে সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দাতব্য সংস্থা বাটল ইউকে। সেখানে বলা হয়, দেশটির অনেক পরিবার খাবার-পোশাক থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণের সংকটে ভুগছে। এমনকি অনেকের ঘুমানোর জন্য বিছানা পর্যন্ত নেই, তাদের মেঝেতে ঘুমাতে হয়। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

১ হাজার ৫৬৭টি পরিবারের ওপর পরিচালিত এ জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগ পরিবারের অভিভাবকরা এক বেলার খাবার বাদ দিয়েছেন। অনেকে সন্তানদের জন্য নিজেদের বিছানা ছেড়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে খাবার, জ্বালানি ও পোশাকের মতো আবশ্যক পণ্যের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। অবনতি হয়েছে স্বাস্থ্য পরিস্থিতিরও। 

বাটল ইউকের গবেষণা অনুসারে, ব্রিটিশ দরিদ্র পরিবারগুলোর বেশির ভাগই অর্থাভাবে ঠাণ্ডার দিনে বাড়ি গরম রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট অভিভাবক ও সন্তানদের সম্পর্ককে চাপের মধ্যে ফেলেছে।

জরিপে বেশির ভাগ পরিবারের প্রধান0বলেছেন, তারা দুপুরের খাবার বাদ দিয়েছেন। অর্ধেক পরিবার বলেছে, তাদের বাড়ির সবার ঘুমানোর মতো পর্যাপ্ত বিছানা নেই। সন্তানদের খাবার নিশ্চিত করতে সংযমের কথা বলেছেন অনেক অভিভাবক। তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের প্রয়োজন পুরোপুরি ছেঁটে ফেলেছেন, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে গুরুতর প্রভাব ফেলছে।

সাম্প্রতিক বছরে ইউরোপে জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে। এ কারণে শীতে বাড়ি গরম রাখার উপকরণ কিনতে বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র পরিবারগুলো। জরিপে অংশ নেয়া অনেক পরিবার জানিয়েছে, তাদের বাড়ির দেয়ালে কালো ফাঙ্গাস পড়েছে। কিন্তু ঠাণ্ডা ও আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে তা সরিয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আসবাবপত্র ও পোশাকে ছড়িয়ে পড়ায় শিশুরা কাশিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। 

বাটল ইউকের প্রধান নির্বাহী জোসেফ হাওস বলেছেন, ‘এ প্রতিবেদন আমাদের দেখায় যে জীবনযাত্রার ব্যয়ে সৃষ্ট সংকট এখনো শেষ হয়নি। পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়া আটকাতে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’

দুই সন্তান রয়েছে এমন পরিবারের জন্য সরকারি সুবিধা বাড়ানোর, ইউনিভার্সাল ক্রেডিট পেমেন্ট বৃদ্ধি ও দরিদ্র যুবকদের জন্য একটি স্বাস্থ্য কৌশল প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে বাটল ইউকে। এছাড়া জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা এনএইচএসের শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের সংস্কারের আহ্বানও জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, ‘কোনো শিশুর দারিদ্র্যে আক্রান্ত হওয়া উচিত নয়। আর এজন্যই আমাদের নতুন আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্স একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী কৌশল তৈরি করতে কাজ শুরু করেছে, যা শিশুদের দারিদ্র্য কমাতে ও তাদের জীবন শুরু করার সেরা সুযোগ দিতে সাহায্য করবে। তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের পাশাপাশি আমরা ইউনিভার্সাল ক্রেডিট পর্যালোচনা করব, প্রতিটি স্কুলে বিশেষজ্ঞ মানসিক স্বাস্থ্য দেব এবং প্রাথমিক স্কুলে বিনামূল্যে প্রাতঃরাশ ক্লাব চালু করব।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫