আমাদের বড় লক্ষ্যই ইস্পাত পণ্যের মানোন্নয়ন

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪

আলীহোসাইন আকবরআলী

আলীহোসাইন আকবরআলী। ১৯৭২ সালে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি শেষ করার পর বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন তার বাবা আকবরআলী আফ্রিকাওয়ালার পরামর্শেই। ১৯৭৭ সালে হাল ধরেছেন ইস্পাত খাতে নিজের পারিবারিক ব্যবসার। কারখানায় অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জনের পর ১৯৮৫ সালের মধ্যে পুরো দায়িত্বভার তার হাতে তুলে দেন বাবা। শুরুটা শুধু প্রতিষ্ঠানটির পরিবর্তনই আনেনি বরং বদলে দিয়েছেন দেশে ইস্পাত খাতের দিকপ্রকৃতি। বাংলাদেশের শীর্ষ লৌহ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুগের পর যুগ ভারী শিল্প খাতের নেতৃত্ব দিয়ে আসার এ পথপরিক্রমায় নিজের চিন্তা ও পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে।

আপনাদের লক্ষ্য নিয়ে জানতে চাই 

ইস্পাতপণ্যের সেফটি ও কোয়ালিটি আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিএসআরএম প্রবৃদ্ধি বিশ্লেষণ করে অগ্রসর হয় কিন্তু সেফটি ও কোয়ালিটি নিয়ে কখনো আপস করবে না। আগামীতেও সামনে চলার পথ এ নীতিতে চলবে। এজন্য দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাতে প্রতিনিয়তই কাজ চলছে। আমার ছেলে আমীর আলীহোসাইন পড়াশোনা শেষ করে ২০০০ সাল থেকে বিএসআরএমে যোগ দেন। তাকে কিন্তু প্রথমেই বড় পদ না দিয়ে বরং শিক্ষানবিশ কর্মী হিসেবেই যোগদান করতে হয়েছে। পরে ধাপে ধাপে দক্ষতা অর্জনের পর সে বর্তমানে নেতৃত্বে এসেছে। ব্যবসা যুগের পর যুগ টিকিয়ে অথবা এগিয়ে রাখতে এমন পদক্ষেপ গুরুত্ব বহন করে। ভালো ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জের মুখেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। 

ব্যবসা পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ কী?

ব্যবসার খরচ কমাতে না পারাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের ব্যবসায় খরচ অনেক বেশি। উৎপাদনে আমরা দক্ষতা বেশ ভালো পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি। এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। এখন শিল্পের কাঁচামাল আনার ফ্রেইট, বন্দরের হ্যান্ডলিং, লাইটারিং কস্ট, অভ্যন্তরীণ পরিবহন সুবিধার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দক্ষতা নিশ্চিত করতে পারলে ইস্পাত খাতের প্রবৃদ্ধিতে বড় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। শিল্পের স্বার্থে কর কাঠামোকে একটি যৌক্তিক পর্যায়ে আনা প্রয়োজন। ন্যূনতম কর ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসা দরকার। ব্যবসা লোকসান করলেও কর দিতে হবে—এটা তো হতে পারে না। করনীতি এতটাই জটিল যে এটা সবার বোধগম্য নয়। করনীতি সহজ ও সময়োপযোগী করাটা শিল্পের বিকাশেই জরুরি। এছাড়া শিল্প বিকাশ ত্বরান্বিত করতে কালচার অব ইনোভেশন ও কালচার অব কোয়ালিটি এ দুটি নিশ্চিত করতে উপযুক্ত পরিবেশ থাকাটা জরুরি। 

প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নিয়ে কিছু বলুন।

বিএসআরএম একটা পরিবার। পাঁচ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে এ বিশাল পরিবার। উৎপাদন থেকে বিপণন সর্বস্তরেই দলগতভাবে দুর্দান্ত কাজ করে চলেছে সবাই। এমনভাবে আগলে রেখেছে বড় কোনো বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়নি এখনো। পড়িনি। পরোক্ষভাবেও বিএসআরএমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কর্মী।

বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করতে কী করা প্রয়োজন বলে মনে করেন?

উৎপাদনশীলতা বাড়ানো ও খরচ কমানো জরুরি। দারিদ্র্য বিমোচনে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে হবে। এখানে বেসরকারি খাতের বড় ভূমিকা রয়েছে। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ও বাণিজ্য সহজ করে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে। উদ্যোক্তাদেরও চলার পথে প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। অর্থনীতিকে বড় করতে ম্যানুফ্যাকচারিং বরাবরই মুখ্য ভূমিকা রাখায় শ্রমঘন বাংলাদেশের জন্য ম্যানুফ্যাকচারিং খাতনির্ভর হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫