সৌদি আরবে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) ব্যাংক থেকে রিয়েল এস্টেট খাতে ঋণ বেড়ে ৮১ হাজার ৬৮৩ কোটি রিয়াল বা ২১ হাজার ৭৮২ কোটি ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। এ তথ্য দিয়েছে সৌদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা এসএএমএ। পরিসংখ্যান অনুসারে, অর্থের এ পরিমাণ ওই তিন মাসে ব্যাংক খাতের ঋণ পোর্টফোলিওর প্রায় ৩০ শতাংশ। খবর আরব নিউজ।
সামগ্রিক রিয়েল এস্টেট ঋণের মধ্যে খুচরা পর্যায়ে ঋণ সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৭৯ শতাংশ, যা আগের বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৬৪ হাজার ১৭২ কোটি রিয়াল। বাকি ঋণ নিয়েছে করপোরেট রিয়েল এস্টেট খাত, যা ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেড়ে ১৭ হাজার ৫১২ কোটি রিয়াল হয়েছে।
সৌদি ব্যাংকের মোট ঋণ পোর্টফোলিওর মধ্যে রিয়েল এস্টেট খাতে অর্থ বিতরণ সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, পাঁচ বছর আগেও রিয়াল এস্টেট খাত ঋণের পরিমাণ মোট বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশ ছিল। ২০২১ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ, পরবর্তী দুই বছরে বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ২৮ দশমিক ৫ ও ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের হিসাবে রিয়েল এস্টেট ঋণ এখন দেশটির মোট ঋণের ২৯ দশমিক ৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মূলত ক্রমবর্ধমান শহুরে জীবনধারা, উন্নয়ন কার্যক্রম ও ই-কমার্সের উত্থানসহ বেশকিছু কারণে সৌদি আরবে রিয়েল এস্টেট খাতের সম্প্রসারণ হচ্ছে। এছাড়া দূরবর্তী অঞ্চলে কাজের সুযোগ বাড়ায় স্থানান্তর, জনবিন্যাসে পরিবর্তন ও সহায়ক সরকারি নীতিগুলোর প্রভাব পড়ছে এ খাতে।
সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবে বিশেষ করে আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট ও ভিলা থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক অফিস ও খুচরা পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের সম্পত্তির চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
সৌদি আরবের অর্থনীতিকে বহুমুখী করার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাচ্ছে ‘ভিশন ২০৩০’। এর অন্যতম লক্ষ্য হলো, বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ ও টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য একটি শক্তিশালী কাঠামো তৈরি। যেখানে প্রাধান্য পাচ্ছে রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগ ও উন্নয়ন। সম্প্রতি দেশটি প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) সহজ করতে একাধিক নীতি সংস্কারও করেছে।
বিশ্লেষক সংস্থা মর্ডার ইন্টেলিজেন্সের এক জরিপ অনুসারে, সৌদি আরবের বাণিজ্যিক রিয়েল এস্টেট বাজার বেশ প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় রয়েছে। এখানে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কারণে নতুন সম্পত্তির চাহিদা বাড়ছে। এ কারণে গৃহ অর্থায়ন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি নাগরিকদের ৭০ শতাংশের বাড়ির মালিকানা থাকবে। অর্থায়নের ক্রমবর্ধমান হার সরকারের এ লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেও জানানো হয় জরিপে।