উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্রিফিংয়ে আসিফ মাহমুদ

গণহত্যার সম্পূর্ণ বিচারের আগ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন নয়

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণভবনকে গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর বানানো হবে

অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘আমরা এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি দেখতে পেয়েছি। যেহেতু আমরা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত একটি সরকার, আমরা মনে করি, সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।’ 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিদের সর্বশেষ বৈঠক নিয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল সন্ধ্যায় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় উপদেষ্টা পরিষদ গণভবনকে ‘গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান তিনি।

সভা শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘‌ফ্যাসিবাদী যে রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক জোট বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল; সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না, সে বিষয়টি আমরা জনগণের কাছে ছেড়েছি। তাদের কোনো পাবলিক প্রোগ্রাম করার ক্ষেত্রে সেটিকে কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনা হয়নি। আমরা এটিকে অবশ্যই নিরুৎসাহিত করব। সম্পূর্ণভাবে বিচার করার জন্য সরকার এরই মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে কাজ করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।’ এ সময় উপদেষ্টা পরিষদ গণভবনকে ‘গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি। 

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘‌আমাদের যে গণভবন আছে, সেটির যে নাম, তা প্রকৃত অর্থে সেই গণভবন হয়ে উঠতে পারেনি। এ গণভবনকে যেহেতু ছাত্র-জনতা একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জয় করেছে, এটিকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি, শহীদদের স্মৃতি, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে যত অন্যায়-অবিচার হয়েছে; সবকিছুর স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য এটিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।’

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘‌খুব দ্রুত এটির কার্যক্রম শুরু হবে। গণভবন যেমন আছে, জনগণ যেভাবে এটাকে অধিকার করেছে; এটিকে জয় করেছে, ঠিক সে অবস্থায় রাখা হবে। এর মধ্যে ভেতরে আমরা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করব, যাতে এ অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। সে বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘সাউথ কোরিয়ায় একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এমন একটি মেমোরিয়াল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, তার স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য। পৃথিবীতে আরো বিভিন্ন জায়গায় এটা হয়েছে। আমরা সেখান থেকে এটি প্রস্তুতে তাদের যে অভিজ্ঞতা সেটিকে নেব। ফ্যাসিবাদী সময়ের অত্যাচারের স্মৃতি, আমাদের শহীদদের স্মৃতি কীভাবে সংরক্ষণ করে সুন্দর একটি জাদুঘর করা যায়; এ বিষয়ে খুব দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে দ্রুত রিভিউ কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘‌শ্রমিকদের যে শর্ট টার্ম দাবিগুলো আছে, সেগুলো খুব দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য ও সমাধানযোগ্য। রিভিউ কমিটিতে আরএমজির পাশাপাশি নন আরএমজি সেক্টর থেকেও মালিক পক্ষকে রাখা হবে এবং এ দুই সেক্টরের শ্রমিক প্রতিনিধিদেরও রিভিউ কমিটিতে রাখা হবে। একটি রিভিউ কমিটি দ্রুতই আমরা ঘোষণা করব। এ রিভিউ কমিটি যেসব বিষয় খুব দ্রুত সমাধানযোগ্য, সেসব বিষয় নিয়ে কাজ করবে।’ 

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের পঞ্চম সভা। ড. মুহাম্মদ ইউনূস এতে সভাপতিত্ব করেন। 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫