ব্যাংক লেনদেনে সীমা আরোপের প্রভাব পড়েছে পাইকারি পণ্যের বাজারে। গত সপ্তাহেও ডাল, ভোজ্যতেলসহ সব ধরনের পণ্যের দাম ছিল বাড়তির দিকে। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যাংক থেকে নগদ অর্থ উত্তোলনের সীমা ২ লাখ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এতে ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজারে লেনদেনও সীমিত হয়ে পড়েছে। এর প্রভাবে চলতি সপ্তাহে পাইকারিতে প্রায় সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম কমেছে। এছাড়া ব্যবসায়িক দায় পরিশোধের চাপেও অনেকেই নগদে কম দামে পণ্য বিক্রি করছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান ও পাইকারি আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের শেষ দিনে ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম ছিল নিম্নমুখী। গতকাল মসুর ডালের দাম কেজিপ্রতি ৩-৪ টাকা কমে ১২২-১২৩ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। মুগডালের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ৫-৭ টাকা। গতকাল প্রতি কেজি মুগডাল ১৩২-১৬০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। অন্যদিকে মটর ডালের দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা কমে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে পাকিস্তান, তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। ফলে সরবরাহ বেশি থাকায় মসলাপণ্যটির দামও নিম্নমুখী। মসলা আড়তগুলোর দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে দেশী ও ভারত থেকে আমদানি হওয়া পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৯০-৯৫ টাকা। বর্তমানে তা ৮৮-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গতকাল ভারত ও দেশী পেঁয়াজ ছাড়া বিকল্প দেশগুলো থেকে আমদানি হওয়া পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৬০-৭৫ টাকা।
পাইকারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ফার্মগুলোর দেয়া তথ্যে জানা গেছে, আগের সপ্তাহগুলোয় পাইকারিতে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চিনির দাম ছিল ৬ হাজার ৩০০ টাকা। বর্তমানে দাম কমে ৬ হাজার টাকার নিচে বেচাকেনা হচ্ছে।
পাম অয়েলের দাম কমে বর্তমানে বেচাকেনা হচ্ছে মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) ৪ হাজার ৮৫০ থেকে ৪ হাজার ৯০০ টাকায়। গতকাল সয়াবিনের দাম ছিল মণপ্রতি ৫ হাজার ৮০০ টাকা। মানভেদে গমের দাম কমে মণপ্রতি ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকার মধ্যে বেচাকেনা হয়েছে।
এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেকান্দর বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পাইকারি বাজারে পণ্যের বেচাকেনায় নগদ অর্থ গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংক থেকে প্রতিদিন মাত্র ২ লাখ টাকার বেশি উত্তোলনের সুযোগ না থাকায় ব্যবসায়ীরা চাইলেও বাড়তি পণ্য ক্রয় করতে পারছেন না। এ কারণে বেচাকেনার পরিমাণ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে, যার প্রভাব পড়েছে পণ্যের দামে।’
খাতুনগঞ্জের হামিদ উল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পাইকারি বাজারে নগদ অর্থের প্রবাহ একেবারেই কমে গেছে। ফলে পাইকারিতে পণ্যের দাম কমলেও সরবরাহ কম হওয়ায় খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়ছে না।’