কম্পিটিশন কমিশন অব ইন্ডিয়ার অভিযোগ

ডেভেলপারদের ইন-অ্যাপ পারচেজ সিস্টেম ব্যবহারে বাধ্য করছে অ্যাপল

প্রকাশ: জুলাই ১৪, ২০২৪

বণিক বার্তা ডেস্ক

অ্যাপ মার্কেটে প্রভাবশালী অবস্থানের অপব্যবহার করে অ্যাপল ডেভেলপারদের তার নিজস্ব ইন-অ্যাপ পারচেজ সিস্টেম ব্যবহারে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক প্রতিবেদনে প্রযুক্তি খাতের জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে কম্পিটিশন কমিশন অব ইন্ডিয়া (সিসিআই) যদিও অ্যাপল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করেছে। কোম্পানিটির ভাষ্য, ভারতে অ্যাপলের চেয়ে গুগল অ্যান্ড্রয়েডের ব্যবহার প্রভাব বেশি। অবস্থায় অ্যাপলের প্রভাব বিস্তারের প্রশ্ন আসে না। খবর রয়টার্স।

সিসিআইয়ের তদন্ত ইউনিটের ১৪২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ডিজিটাল পণ্য পরিষেবাগুলো গ্রাহকদের কাছে কীভাবে পৌঁছাবে তার ওপর উল্লেখযোগ্য মাত্রায় প্রভাব বিস্তার করছে অ্যাপল। বিশেষ করে আইওএস প্লাটফর্ম অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে প্রভাব খাটাচ্ছে কোম্পানিটি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরকে এড়িয়ে অন্য কোনো প্লাটফর্ম ব্যবহারের সুযোগ নেই অ্যাপ ডেভেলপারদের। এজন্য অ্যাপলের বিলিং পেমেন্ট সিস্টেমের বাধ্যতামূলক ব্যবহারসহ অন্যান্য শর্ত মেনে না চলার কোনো বিকল্প নেই তাদের।

অ্যাপলের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের বিষয়ে সিসিআই জানায়, কোনো প্রকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছার আগে অ্যাপল অন্য পক্ষগুলোকে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার অনুমতি দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতামূলক বাজারে শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ অ্যাপলের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম নয়। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অ্যান্টিট্রাস্ট নিয়ন্ত্রকরা অভিযোগ তুলেছিলেন, অ্যাপল ইইউর প্রযুক্তিসংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। এজন্য আইফোন প্রস্তুতকারকের মোটা অংকের জরিমানা হতে পারে বলে। কোম্পানিটি ওই সময় অ্যাপ ডেভেলপারদের ওপর আরোপিত নতুন ফি নিয়েও তদন্তের সম্মুখীন হয়েছে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, জাপান দক্ষিণ কোরিয়ার পর ভারতে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার মুখোমুখি হয়েছিল অ্যাপল। মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টটির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ডেভেলপারদের ইন-অ্যাপ কেনাকাটায় অ্যাপলের লেনদেন প্লাটফর্ম ব্যবহারে বাধ্য করা এবং ৩০ শতাংশ কমিশন গ্রহণের। এর মাধ্যমে বাজারে একক আধিপত্য বিস্তার করছে অ্যাপল। ওই সময় ভারতের অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার অভিযোগের সঙ্গে ইইউর দায়ের করা অভিযোগের মিল পাওয়া যায়। ভারতে অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলাটি করে স্বল্প পরিচিত অলাভজনক সংস্থা টুগেদার উই ফাইট সোসাইটি। তাদের ভাষ্য, অ্যাপ ডেভেলপার ক্রেতাদের খরচ বাড়িয়ে প্রতিযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে অ্যাপলের ওই ৩০ শতাংশ ফি। পাশাপাশি এটি বাজারে প্রবেশের প্রতিবন্ধকতা হিসেবেও কাজ করছে।

মামলার নথিতে বলা হয়, ৩০ শতাংশ কমিশনের অস্তিত্ব থাকার মানে দাঁড়াচ্ছে, কিছু অ্যাপ ডেভেলপার কখনো বাজারে পৌঁছতে পারবে না এবং এটি ভোক্তার ক্ষতির কারণ হয়েও দাঁড়াতে পারে।

কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত ভারতে ৬৯ কোটি স্মার্টফোনের প্রায় দশমিক শতাংশ ফোন অ্যাপলের আইওএস-চালিত। বাকিগুলো অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের। যদিও গত পাঁচ বছরে ভারতে অ্যাপলের স্মার্টফোন ব্যবহার পাঁচ গুণ বেড়েছে।

সিসিআইয়ের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের অক্টোবরে সংস্থাটি গুগলকে ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার জরিমানা করেছিল। ওই সময় গুগলকে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তৃতীয় পক্ষের বিলিং ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে গুগল ডেভেলপারদের কোম্পানির ইন-অ্যাপ পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করতে বাধ্য করা যাবে না।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫