যশোরে কৃষিজমি কমলেও খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে

প্রকাশ: জুলাই ০৮, ২০২৪

আব্দুল কাদের, যশোর

কৃষিসমৃদ্ধ যশোরে দিনের পর দিন কমছে আবাদি জমির পরিমাণ। শহরায়ণ, অপরিকল্পিত আবাসন ও মাছের ঘের তৈরির কারণে প্রতি বছরই কৃষিজমি চলে যাচ্ছে অকৃষি খাতে। তবে আবাদি জমি কমলেও কৃষি উৎপাদনে ভাটা পড়েনি। উপরন্তু প্রতি বছর বাড়ছে। গবেষণাগারে উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের সবজি, ফল ও খাদ্যশস্য উৎপাদনশীলতা ধরে রাখছে বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তারা।

জেলা পরিসংখ্যান অফিসের কৃষিশুমারি অনুযায়ী ২০০৮ সালের জরিপে আটটি উপজেলায় কৃষিজমির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার ৪৭৬ হেক্টর। ২০২২ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫০৪ হেক্টরে। অর্থাৎ এক দশকে ৫ হাজার ৯৯৮ হেক্টর কৃষিজমি কমেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিন ফসলি জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে যশোরে গড়ে উঠছে বসতবাড়ি, মার্কেট, দোকানপাটসহ অন্যান্য অবকাঠামো। এছাড়া বিস্তৃত কৃষিজমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে ইটভাটাসহ অন্যান্য স্থাপনা। কাগজ-কলমে ওই হিসাবের তুলনায় বাস্তবে কৃষিজমির পরিমাণ কমেছে আরো অনেক বেশি।

অবশ্য কৃষি কর্মকর্তাদের দাবি, আবাদি জমি কমলেও উৎপাদন একটুও কমেনি, বরং উৎপাদন বেড়ে চলায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তা সরবরাহ করা হচ্ছে। কিছু কিছু খাদ্যশস্য রফতানিও হচ্ছে। এর পরও জেলায় উদ্বৃত্ত থাকছে খাদ্যশস্য।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট জনসংখ্যা ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৫৯২। খাদ্যের চাহিদা বছরে ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৩০ টন। প্রতি বছর উৎপাদন হয় ১১ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৫ টন। চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৭৯৫ টন। জেলায় সবজির চাহিদা রয়েছে ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৪০৩ টন। উৎপাদন হয় ৮ লাখ ৭৮ হাজার ৮৮ টন। উদ্বৃত্ত থাকে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৪৮৫ টন। অর্থাৎ চাহিদার প্রায় দ্বিগুণ সবজি উৎপাদন হয়। এছাড়া ফলের চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৬০ টন। উৎপাদন হয় ২ লাখ ১৭ হাজার ১৪১ টন। চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকে ৫৫ হাজার ৮৮১ টন।

এ ব্যাপারে বারি যশোরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাওসার উদ্দিন আহাম্মদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো গবেষণা করে ফসলের বিভিন্ন জাত উদ্ভাবনসহ সেই জাতের আরো উন্নয়ন করা। এছাড়া উদ্ভাবিত জাতটি কীভাবে চাষ করতে হবে, তার আধুনিক কলাকৌশল ও প্রযুক্তি সম্পর্কে কৃষককে ধারণা দেয়া। কোনো ফসলের জাত উদ্ভাবনের পর সেটি উচ্চ ফলনশীল হলে, আবাদের জন্য আমরা সেটি কৃষক পর্যায়ে পৌঁছে দিই। যশোর কেন্দ্র থেকে আমের দুটি নতুন জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। একটি বারি-৫ ও অন্যটি বারি-৮। এছাড়া বারি খাটো জাতের একটি বরবটির জাত উদ্ভাবন হয়েছে। এটি শীতকালে ফলন দেবে। এছাড়া সরিষার নতুন আরেকটি জাত উদ্ভাবনে কাজ করছি। ফলের মধ্যে আতা, চালতা, রঙিন আম ও সফেদার জাত উন্নয়নে কাজ চলছে।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫