ভোলায় নির্মাণ শেষের আগেই ধসে পড়ল সুইমিং পুল

প্রকাশ: জুলাই ০৮, ২০২৪

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, ভোলা

ভোলায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সুইমিং পুল নির্মাণ করছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ২০২৩ সালের শেষ দিকে শুরু হওয়া নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এরই মধ্যে ধসে পড়েছে স্থাপনাটি। গত শনিবার বিকালে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠসংলগ্ন সুইমিং পুলের বড় একটি অংশ ধসে পড়ে।

অভিযোগ রয়েছে, সেন্টারিংয়ের কাজে স্টিল শাটারিংয়ের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে কাঠ। এছাড়া স্টিলের বদলে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশ। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণেই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, গজনবী স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন, ইনডোর স্টেডিয়াম এবং সুইমিং পুল নির্মাণকাজের আওতায় সুইমিং পুলটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে স্থাপনাটির জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৯ কোটি ৬৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পায় রাশেদুজ্জামান টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং এসএ খান (জিবি) কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দাবি, কাজটি বিক্রি করে দেয়া হয়েছে চরফ্যাশন পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার শামীম আহমেদের কাছে। এর পর থেকে শামীমের নিকটাত্মীয় শহীদ নামে এক ব্যক্তি নিজেকে ঠিকাদার দাবি করে কাজের তদারকি চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০২৩ সালের শেষ দিকে সুইমিং পুল নির্মাণ শুরু হলে উঠে আসে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম চিত্র। প্রতিটি ঢালাইয়ে স্টিল শাটারিং ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহার হচ্ছে কাঠ। স্টিলের বল্লির বদলে ব্যবহার হচ্ছে বাঁশ। ৩০ ফুট উঁচুতেও বাঁশের বল্লির মাধ্যমে নিচ থেকে কাঠের সেন্টারিং করে তার ওপর ঢালাই কাজ করা হচ্ছে। রড, সিমেন্টসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পৌরসভার বাসিন্দা সোলাইমান, শাহাবুদ্দিন, বিকাশ, নুরুন্নবী, লিটুসহ অনেকে জানান, ঘটনাটি যে সময় ঘটেছে, তখন তারা মাঠে হাঁটতে এসেছিলেন। অবাক করার বিষয় হলো প্রকল্প এলাকায় ব্যারিকেড দেয়া ছিল না। আশপাশে তেমন মানুষ না থাকায় হতাহত কিংবা প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটেনি। যদি বিকাল ৫টার পর ঘটনাটি ঘটত, হয়তো অনেক মানুষের প্রাণহানি হতে পারত। কেননা ওই জায়গায় সবসময় মানুষ ব্যায়াম করতে আসে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন প্রতিনিধি জানান, এমন ঘটনায় তারাও কিছুটা শঙ্কিত। কারণ ২০ শ্রমিক ওপরে উঠে কাজ করেছিলেন। তখন কোনো ধরনের দুর্ঘটনার লক্ষণ ছিল না। কিন্তু ৩ ঘণ্টা পর এমনটি কেন হলো তার সদুত্তর দিতে পারেননি তারা। সেন্টারিংয়ে বাঁশ ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে বিষয়টি তারা এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ কাজটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে হওয়ায় আমাদের তেমন কিছু করণীয় নেই। এর পরও এ ধরনের একটি ঘটনাকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। আমাদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়ে সার্বিক বিষয় জানানো হবে।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫