সেচ সংকট নিরসনে মাদারীপুরে খাল খনন

প্রকাশ: জুলাই ০৭, ২০২৪

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, মাদারীপুর

মাদারীপুরের শিবচরে কয়েকটি খাল ও জলাশয় কয়েক দশকে ভরাট হয়ে যায়। এ কারণে কৃষিজমিতে সেচ সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। বর্ষা মৌসুমেও পানি সংকটে ব্যাহত হয়েছে কৃষি উৎপাদন। তবে ছয়টি খাল খনন করায় নিরসন হয়েছে সেচ সংকট। ফসল উৎপাদনও বেড়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাইকার অর্থায়নে ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ভাণ্ডারিকান্দি ইউনিয়নের বাহাদুর, টেংরামারি ও ক্রোকচরসহ ছয়টি খাল খনন করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হয়। খালগুলো খননের ফলে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক ও সারা বছর খালে পানি থাকায় সেচ সংকট দূর হয়েছে।

টেংরামারি গ্রামের কৃষক মো. সিরাজ বলেন, ‘আমাদের গ্রামে ৪০ বছর আগে খাল খনন করা হয়েছিল। এরপর আর খনন হয়নি। খালগুলো পলি পড়ে ভরাট হয়ে গিয়েছিল। পানি পাওয়া যেত না। গত বছরের সেপ্টেম্বরে টেংরামারি খালটি নতুন করে খনন করায় সারা বছরই পানি পাওয়া যাচ্ছে। এতে ফসল উৎপাদন যেমন বেড়েছে, তেমনি সেচ খরচও কমে গেছে।’

একই এলাকার আরেক কৃষক নোয়াব আলী ব্যাপারী বলেন, ‘এবার দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। খালে পানি থাকায় পাটখেতেও এখন পানি রয়েছে। আগে তো পানিই ছিল না। পাট জাগ দেয়ার মতো পানিও খুঁজে পাওয়া যেত না। বাড়তি খরচ করে দূরের নদীতে জাগ দিতে হতো। এখন আমাদের খালেই পাট জাগ দিতে পারব।’

বাহাদুর খালপাড়ের বাসিন্দা হারুণ অর রশিদ বলেন, ‘গত বছর পানির অভাবে এক বিঘা জমির পেয়াঁজ নিয়ে বিপাকে পড়েছিলাম। কিন্তু এবার বাহাদুর খালে পানি থাকায় আগামী রবি ফসল উৎপাদন করতে পারব। ফসল উৎপাদন আগের চেয়ে বাড়বে।’

এ বিষয়ে ভাণ্ডারিকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম চোকদার বলেন, ‘খালগুলো খনন করায় সেচ খরচ কমেছে। গত বছর সেপ্টেম্বরে খালগুলো খনন করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে কৃষক খালের পানি ব্যবহার করে পাট চাষ করছেন। আগামীতেও এ সুবিধা কৃষক ভোগ করতে পারবেন।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) শিবচর উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ‘ভাণ্ডারিকান্দি ইউনিয়নের খাল খনন করায় কৃষিজমিতে ফসল উৎপাদন বেড়েছে। পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন বাড়বে।’

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সন্তোষ চন্দ্র চন্দ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘শুধু ভাণ্ডারিকান্দির খাল খননই যথেষ্ট নয়। জেলার আরো অনেক খাল রয়েছে, সেগুলো খনন করা প্রয়োজন। খনন করা খালের পানি ওই এলাকার কৃষি উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে। পানি থাকায় ফসল আগের চেয়ে দ্বিগুণ উৎপাদন হচ্ছে। কৃষকের সেচ খরচও কমে গেছে।’ 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫