বিটিএমএর সংবাদ সম্মেলন

রফতানির ভুল তথ্য দেখিয়ে ক্ষতি করা হয়েছে

প্রকাশ: জুলাই ০৭, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

রফতানির ক্ষেত্রে মিথ্যা বা ভুল তথ্য দেখিয়ে বস্ত্র তৈরি পোশাক খাতের ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকনের মতে, এটা একটা ষড়যন্ত্র। যার মাধ্যমে খাত উপকৃত হয়নি, উল্টো নগদ প্রণোদনা কমানো হয়েছে।

গতকাল ঢাকায় বিটিএমএ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

বিটিএমএর সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সদস্যরা চাহিদার শতভাগ সরবরাহ করতে সক্ষম হলেও চোরাইপথে দেশীয় চাহিদার প্রায় ১৫ শতাংশ কাপড়ের অনুপ্রবেশ ঘটছে। এতে সরকার প্রচুর রাজস্ব হারাচ্ছে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ আলী খোকন জানান, দেশে প্রতি বছর সাত বিলিয়ন মিটার ফ্যাব্রিক বা কাপড়ের চাহিদা রয়েছে। প্রতি মিটার কাপড়ের মূল্য ডলার হিসেবে দেশের মানুষের জন্য বছরে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার বা লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। বিটিএমএর সদস্যরা সাত বিলিয়ন মিটার কাপড়ের প্রায় ৯০ শতাংশ সরবরাহ করছে, যা আমদানি পরিপূরক হিসেবে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করছে।

রফতানির তথ্যে গরমিলের প্রভাব প্রসঙ্গে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বিটিএমএর সভাপতি বলেন, ‘জাতীয় রফতানিসংক্রান্ত কমিটিকে আমরা প্রতিবাদ করে বলেছিলাম, বিজিএমইএর ইউডি (ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশন) আমাদের প্রডাকশন ডাটার সঙ্গে রফতানি ডাটার মিল নেই। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং অন্যান্য লোক আমাদের ধমক দিয়ে বলে, ‘আমরা বলি আমাদের রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে, আর আপনারা (ব্যবসায়ীরা) বলেন কম।

তিনি বলেন, ‘বিজিএমইএ সভাপতিসহ আমরা যারা ছিলাম তারা নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিলাম। সেটা দেখিয়েই সরকার বলছে, আমাদের গ্রোথ বাড়ছে। গ্রোথের কথা বলে আমাদের ফ্যাসিলিটিগুলো আসলে কাট করা হয়েছে। আমি বলব, এটা এক ধরনের ষড়যন্ত্র। আমাদেরকে মিথ্যা তথ্যের গ্রোথ দিয়ে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করা করেছে, আমরা উপকৃত হইনি।

বিটিএমএর সভাপতি আরো বলেন, ‘সব ধরনের রফতানিতে দ্বিতীয়বারের নগদ সহায়তা কমিয়ে গত ৩০ জুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের অজুহাতে প্রণোদনা কমানো হলো। এতে তৈরি পোশাক, চামড়া, পাট, কৃষিসহ ৪৩ খাতে নগদ সহায়তা কমবে রফতানিকারকদের।

প্রণোদনা কমানোর সিদ্ধান্তও প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে টেক্সটাইল শিল্পের জন্য একটি যুগোপযোগী টেক্সটাইল পলিসি প্রণয়ন এবং ব্যাংক লোন পরিশোধের জন্য এক বছরের গ্রেস পিরিয়ড রাখার দাবি জানিয়েছে বিটিএমএ।

সরকারি সহায়তা আরো কত বছর লাগবেসাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘আমাদের থেকে গ্যাস বিল নেয়া হচ্ছে সাড়ে ৩১ টাকা। অথচ পাওয়ার প্লান্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তাদের থেকে নেয়া হচ্ছে সাড়ে ১৫ টাকা, এটা বৈষম্য। তার ঘাটতি আমাদের থেকে নেয়া হয়। এটা তো ভারতবর্ষে নেই। পল্লী বিদ্যুতের কমার্শিয়াল ইন্ডাস্ট্রির সারপ্লাসের ভর্তুকিও আমাদের থেকে নিয়ে পূরণ করা হয়। ভারতবর্ষে কখনো শিল্পের সঙ্গে সরকারের ভর্তুকি মেলানো হয় না। আমরা সাবসিডির বিকল্প চাই। গ্যাস বিদ্যুতের দরে বৈষম্য দূর করুন।

বিটিএমএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, টেক্সটাইল খাতে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে এবং পরোক্ষভাবে প্রায় এক কোটি জনগোষ্ঠী খাতের ওপর নির্ভরশীল।

সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএর সহসভাপতি মো. ফজলুল হক, মোহাম্মদ ফায়জুর রহমান ভুঁইয়াসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫