শ্রমজীবীরা কেন ঋণকে ভয় পায়, শৈশবের অভিজ্ঞতা থেকে জানেন কিয়ার স্টারমার

প্রকাশ: জুলাই ০৬, ২০২৪

বণিক বার্তা অনলাইন

বছর তিন-এক আগের কথা। কিয়ার স্টারমারের লেবার পার্টি বরিস জনসনের কনজারভেটিভ পার্টির কাছে হার্টপুল উপনির্বাচনে হেরে যায়। এরপর দল প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই ভেবেছিলেন কিয়ার স্টারমার।

২০২১ সালের পর ওই হতাশা কাটল মাত্র তিন বছরে। এবার বিশাল জয়ের মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে ক্ষমতায় এল লেবার পার্টি। এক সময় হতোদ্যম হয়ে পড়া কিয়ার স্টারমার এখন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

বৃটিশ ইতিহাসে স্টারমার পঞ্চম ব্যক্তি যিনি লেবার পার্টিকে বিরোধী দলের আসন থেকে ক্ষমতায় নিতে সক্ষম হয়েছেন।

১৯৬২ সালে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন কিয়ার স্টারমার। তারা চার ভাই-বোন। বেড়ে উঠেন দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের সারেতে। তার বাবা একটি কারখানার সরঞ্জাম প্রস্তুত করতেন এবং পেশায় মা ছিলেন নার্স।

শ্রমজীবী শ্রেণীর সঙ্গে জীবনের অভিজ্ঞতা বলতে প্রায়ই কিয়ার স্টারমার দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি যদি শ্রমজীবী হন, আপনি ঋণকে ভয় পাবেন। আমার মা-বাবাও ঋণ ভয় পেতেন।’

কিয়ার স্টারমারের পরিবার কট্টর লেবার পার্টির সমর্থক ছিল, যার প্রতিফলন পাওয়া যায় তার নামে। লেবার পার্টির প্রথম নেতা যিনি কিনা একজন স্কটিশ খনি শ্রমিক ছিলেন, তার নাম কিয়ার হার্ডি।

নানা কারণে কিয়ার স্টারমারের বেড়ে উঠা খুব বেশি সুখকর ছিল না। তার পারিবারিক জীবন ছিল যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। 

কিয়ার স্টারমার তার পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি পড়াশোনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। লিডস ও অক্সফোর্ডে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। তবে রাজনীতি নিয়ে তার বরাবরই খুব আগ্রহ ছিল। যুবক বয়সে তিনি ছিলেন উগ্র বামপন্থী।

ব্যারিস্টার হিসেবে মানবাধিকার নিয়েও কাজ করেছেন কিয়ার স্টারমার। ওই সময় ক্যারিবিয়ান ও আফ্রিকার দেশগুলোয় মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্তির জন্য তিনি কাজ করেন। আবার পাবলিক প্রসিকিউশনের ডিরেক্টর ও ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

কিয়ার স্টারমার ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের বেশ প্রভাবশালী ও সিনিয়র প্রসিকিউটর সরকারি কৌঁসুলি ছিলেন।  

২০১৫ সালে কট্টর বাম রাজনীতিবিদ জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে লেবার পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছিল। তখন কিয়ার স্টারমার প্রথমবারের মতো সংসদে যান। অভিবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সরকারের কার্যকলাপ নজরে রাখার জন্য তাকে ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন জেরেমি করবিন।

২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর লেবার পার্টির নেতা হওয়ার সুযোগ পান কিয়ার স্টারমার। এ সময় তার বয়স ছিল প্রায় পঞ্চাশের কোঠায়। আর এরপরের গল্প তো সবারই জানা।

গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি। বিশাল এ জয়ের মধ্য দিয়ে ১৪ বছর পর দলটি আবারো ব্রিটেনের রাষ্ট্রক্ষমতায় ফিরে এল।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫