বিষাক্ত ও অতিমূল্যের পাফারফিশের স্বাদ নুডলসে

প্রকাশ: জুলাই ০৫, ২০২৪

বণিক বার্তা ডেস্ক

জাপানে অন্যতম দামি খাবার হিসেবে পরিচিত পাফারফিশ থেকে তৈরি ডিশ। একই সঙ্গে ব্যয়বহুল ও সম্ভাব্য বিষাক্ত এ খাবারের জন্য অভিজাত রেস্তোরাঁগুলোয় ১২৫ ডলার পর্যন্ত গুনতে হয়। এবার ব্যয়বহুল খাবারটিকে সাধারণের হাতের নাগালে নিয়ে এল জাপানের ইনস্ট্যান্ট নুডলস জায়ান্ট নিসিন ফুডস। খবর সিএনএন।

অবশ্য নিসিন যে সরাসরি পাফারফিশ পরিবেশন করছেন এমন নয়, বরং বিশেষায়িত নুডলসে পাওয়া যাবে ফুগু বা পাফারফিশ ফ্লেভার, যার একটি প্যাকের দাম ধরা হয়েছে প্রায় ২ ডলার। 

নিজেদের ওয়েবসাইটে নিসিন জানায়, নুডলসের মূল প্যাকেটের সঙ্গে পাফারফিশের নির্যাসসমৃদ্ধ তেলের ছোট একটি প্যাকেট যোগ করা হয়েছে। তবে নির্যাস তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। 

ফুগু নুডলস এরই মধ্যে ক্রেতাদের মন জয় করেছে বলে মন্তব্য নিসিন ফুডসের। এ বিষয়ে ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরে ফুগু রামেনভিত্তিক রামেন শপগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। 

এমন খবরে জাপানের বাইরে অনেক উচ্ছ্বসিত হলেও দুঃসংবাদই দিলেন নিসিনের একজন মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘জাপানের বাইরে ফুগু ফ্লেভার বিক্রয়ের পরিকল্পনা নেই নিসিনের।’ 

নিসিনের প্রতিটি কাপে রয়েছে চিকেন মিট বল, পেঁয়াজ ও জাপানি স্টাইলে টুকরো করা ডিম। এছাড়া নুডলসকে সুস্বাদু করতে স্যুপের বেইজ তৈরি হয়েছে অল্প পরিমাণে ইউজু ফলের ব্যবহারে।  

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। সাশ্রয়ী ও সহজে তৈরি করা যায়—এমন খাবারের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে ১৯৫৮ সালে মোমোফুকু আন্দো প্রতিষ্ঠা করেন নিসিন ফুডস। এ কোম্পানির সিগনেচার আইটেম হলো কাপ নুডলস, যা তাদের সুপরিচিত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডে পরিণত করে। সর্বশেষ অর্থবছরে নিসিনের আয় ছিল ৪৫০ কোটি ডলারের বেশি। 

পাফারফিশে তৈরি খাবার জাপানে বেশ জনপ্রিয় হলেও এটি বেশ বিষাক্ত। ঠিকঠাকভাবে প্রস্তুত করা না গেলে ভোক্তার মৃত্যুও হতে পারে।

এ মাছের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, চামড়া, রক্ত ও হাড়ে থাকে উচ্চ মাত্রায় টেট্রোডোটক্সিন, যা একটি মারাত্মক বিষ। এ বিষ শরীরে গেলে মুখের চারপাশে ঝাঁকুনি অনুভব ও মাথা ঘুরতে পারে। খিঁচুনি, শ্বাসযন্ত্রের পক্ষাঘাত এবং মৃত্যুও হতে পারে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মৎস্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও উপক্রান্তীয় সমুদ্রে পাফারফিশ পাওয়া যায়। কলম্বিয়ার সোনালি ব্যাঙের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বিষাক্ত মেরুদণ্ডী প্রাণী এটি।

পাফারফিশ থেকে খাদ্য প্রস্তুতের জন্য জাপানের শেফদের বিশেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। এ পরীক্ষার আগে কমপক্ষে দুই বছর নিতে হয় প্রশিক্ষণ। 

২০২০ সালে ফিলিপাইনে তিনজন লোক পাফারফিশ খেয়ে মারা যান। গত বছর মালয়েশিয়ায় এক বয়স্ক দম্পতি অনলাইন শপ থেকে কেনা পাফারফিশ খাওয়ার পর প্রাণ হারান।

২০১৮ সালে জাপানের গামাগোরি শহরের একটি সুপারমার্কেটে বিক্রি হওয়া ফুগু নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়। তখন বলা হয়, সনদ পাওয়া কর্মচারীদের ব্যর্থতার কারণে যথাযথভাবে যকৃত অপসারণ করা হয়নি।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫