২০২৪ সাল

মধ্যপ্রাচ্যের নিম্ন আয়ের দেশে গতিশীল হবে রেমিট্যান্স প্রভাব

প্রকাশ: জুলাই ০৩, ২০২৪

বণিক বার্তা অনলাইন

ভূরাজনৈতিক সংকট ও গত বছরের দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরও চলতি বছর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় রেমিট্যান্স প্রবাহ দ্রুত গতিতে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে সম্প্রতি এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। খবর দ্য ন্যাশনাল নিউজ।

অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক ব্রিফিংয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি তেল রফতানিকারক ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিনির্ভর দেশগুলোর আবাসস্থল মেনা অঞ্চলে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে। পরের বছর ২০২৫ সালে বার্ষিক ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে।

রেমিট্যান্সের পুনরুদ্ধারের এ প্রক্রিয়ায় জোরালো ভূমিকা রাখবে উত্তর আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতি ও আরব বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ মিসর। চলতি বছরে দেশটির অর্থনীতিতে একাধিক প্রভাবক ভূমিকা রাখবে। এ সময় বিদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ আসবে। বিশ্বব্যাংক বলছে, মিসরীয় পাউন্ডের অবমূল্যায়ন, ৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের রাস এল হেকমা চুক্তির অধীনে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে ৮০০ কোটি ডলারের চুক্তি দেশটির অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে পোর্টফোলিও বিনিয়োগ ও বিদেশ থেকে মিসরীয়দের পাঠানো অর্থ।

গত বছরে অক্টোবরে শুরু হওয়া সংঘাত ফিলিস্তিনের গাজার অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, ‘অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ১৯ শতাংশ। ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের মধ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা অঞ্চলটির অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। তবে চলতি বছরের শেষের দিকে রেমিট্যান্সের একটি শক্তিশালী প্রবাহ আসতে পারে। কারণ এ সময়ের মধ্যে ফিলিস্তিনিরা অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে সংস্কারকৃত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, রেমিট্যান্স এ অঞ্চলের জন্য বাইরের সম্পদের প্রবাহের সবচেয়ে বড় ও তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে স্থিতিশীল উৎস, যা ২০১০ সাল থেকে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) ও অফিশিয়াল উন্নয়ন সহায়তার সমষ্টিকে ছাড়িয়ে গেছে।

যদিও এ অঞ্চলের অর্থনীতি গত বছরের তুলনায় দ্রুত গতিতে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তার পরও গাজা যুদ্ধের মধ্যে ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ নিম্নমুখী ঝুঁকি রয়ে গেছে, যা একটি আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত হওয়ার শঙ্কা তৈরি করেছে।

জ্বালানি তেল আমদানিকারী দেশগুলোয় এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আর্থিক ও চলতি হিসাবের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যা বাহ্যিক অর্থায়নের উদ্বেগ তৈরি করেছে। এক্ষেত্রে রেমিট্যান্স কাছাকাছি ও মাঝারি মেয়াদে এ অঞ্চলের জন্য অর্থায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হতে পারে।

বিশ্বব্যাংক বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের নেতিবাচক প্রভাবগুলো এরই মধ্যে এ অঞ্চলের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে আরো খারাপ করেছে। জর্ডানে রেমিট্যান্স ২০২৩ সালে ৪৫০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে, যা দেশটির জিডিপির ৯ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।

গত বছর মেনায় দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় রেমিট্যান্সের প্রবাহ প্রায় ১৫ শতাংশ কমেছে, যা ৫ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।

বিশ্বব্যাংক বলেছে, ২০২২ সালে এ অঞ্চলে রেমিট্যান্স প্রভাব ৩ দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পায়। এতে প্রধান ভূমিকা রাখে মিসর। আগের বছরের তুলনায় দেশটির রেমিট্যান্স প্রবাহ ৩১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছিল ১ হাজার ৯৫০ কোটি ডলারে। 



সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫