বর্ণাঢ্য আয়োজনে গতকাল ১০৪তম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) দিবস উদযাপন হয়েছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা উন্নয়নে উচ্চ শিক্ষা’। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গতকাল দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি থাকলেও ঢাবি শিক্ষক সমিতি তা বর্জন করে। সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে তারা এ সিদ্ধান্ত নেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-সামাজিক আন্দোলনের সূচনা ও বেগবান করেছে এবং দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের চিন্তা ও সক্রিয়তার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং এর পরবর্তী সব আন্দোলন ও সংগ্রামে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা।
তৎকালীন ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত রমনা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালের ১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। তিনটি অনুষদ, ১২টি বিভাগ, তিনটি আবাসিক হল, ৬০ জন শিক্ষক ও ৮৭৭ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা করা এ বিশ্ববিদ্যালয় এখন ৪০ হাজার শিক্ষার্থী ও প্রায় ২ হাজার ৪৮ শিক্ষক নিয়ে এক বিশাল পরিবার।
উপাচার্য অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল বলেছেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে এ বিশ্ববিদ্যালয় মানবিক, মৌলিক ও প্রায়োগিক শিক্ষার সমন্বয়ে এ অঞ্চলে উচ্চ শিক্ষা বিস্তার করে আসছে। এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রায় ৩৩ লাখ শিক্ষার্থীকে উচ্চ শিক্ষা প্রদান করেছে।’
গতকাল সকাল ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনে পায়রা চত্বরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের নানা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য। সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রা সহকারে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে সমবেত হন।
পরে ‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা উন্নয়নে উচ্চ শিক্ষা’ প্রতিপাদ্যে টিএসসি মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। স্পিকার বলেছেন, উচ্চ শিক্ষার লক্ষ্য শুধু শ্রমবাজার নয়, মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হওয়া জরুরি। জ্ঞান অর্জনের জন্য উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। চিন্তার উৎকর্ষ সাধন ও মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি বিকশিত করার জন্য উচ্চ শিক্ষার দরকার।