বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল থাকার পূর্বাভাস

প্রকাশ: জুলাই ০১, ২০২৪

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে স্থিতিশীল থাকতে পারে। মজুদ সক্ষমতা প্রায় পূর্ণ হওয়ায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় শীর্ষ আমদানিকারক চীনে জ্বালানি তেলের চাহিদা তুলনামূলক কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে শীর্ষ উৎপাদক দেশগুলো থেকে সরবরাহ বাড়তে পারে। এসব কারণ বিবেচনা করে এ সময় বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করছে ৪৪ সদস্যের বিশ্লেষক ও অর্থনীতিদের একটি দল। খবর রয়টার্স। 

বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস অনুসারে, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের গড় মূল্য হতে পারে ব্যারেলপ্রতি ৮৩ ডলার ৯৩ সেন্ট। এর আগে মে মাসে বিশেষজ্ঞরা আভাস দিয়েছেলেন, চলতি বছর ব্রেন্টের গড় ৮৪ ডলার শূন্য ১ সেন্ট হতে পারে। অন্যদিকে চলতি বছর মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের গড় মূল্য দাঁড়াতে পারে ব্যারেলপ্রতি ৭৯ ডলার ৭২ সেন্টে। এর আগে মে মাসে এটি ৭৯ ডলার ৫৬ সেন্ট হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। 

এদিকে চলতি বছরের বর্তমান সময় পর্যন্ত ব্রেন্টের ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিমূল্য গড়ে ৮৩ ডলার ৪ সেন্টে উন্নীত হয়েছে। তবে এর আগে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় এ চুক্তি মূল্য বেড়ে ৯২ ডলার ১৮ সেন্টে পৌঁছেছিল। 

এ বিষয়ে জুলিয়াস বায়েরের বিশ্লেষক নর্বার্ট রুইকার বলেন, ‘সাময়িক সময়ের জন্য কিছুটা অস্থিতিশীলতা দেখা গেলেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামে খুব বেশি ঊর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না। বরং একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে এ পণ্যের দাম ওঠা-নামা করছে। এছাড়া বছরের এ সময়ের জন্য জ্বালানি তেলের প্রয়োজনীয় মজুদও রয়েছে। এসব কারণে সামনের মাসগুলোয় জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল থাকতে পারে।’ 

তবে অন্য বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, গ্রীষ্মজুড়ে ভ্রমণ ও জ্বালানির ব্যবহার বাড়লে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়লে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। অন্যদিকে পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক যদি উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলার বা তার বেশিতে পৌঁছতে পারে। 

চলতি বছর জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ৯ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল থেকে ১০ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেলের মধ্যে থাকতে পারে। এর আগে, প্যারিসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) দৈনিক চাহিদা ৯ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। যদিও চাহিদার বিপরীতে নন-ওপেক দেশগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন বাড়ছে। 

স্বায়ত্তশাসিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের গবেষক উইলিয়াম ওয়েদারবার্ন বলেন, ‘যদি ওপেক প্লাস দেশগুলো বর্তমান পরিকল্পনা থেকে সরে এসে জ্বালানি তেল উৎপাদন বাড়ায়, তাহলে আগামী বছরের শেষ নাগাদ পরিমাণে কম হলেও উদ্বৃত্ত পাওয়া সম্ভব।’ 

চলতি মাসের শুরুতে ওপেক প্লাস দেশগুলো বছরজুড়ে জ্বালানি তেলের উৎপাদন দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। আগামী অক্টোবর থেকে এ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হবে। এছাড়া ২০২৫ সালেও দৈনিক ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল উৎপাদন কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে সংগঠনটির। 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫