চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর

বে-টার্মিনাল প্রকল্পে ৬৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

প্রকাশ: জুন ৩০, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্পের অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে বিশ্বব্যাংক। লক্ষ্যে গত ২৮ জুন ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৬৫ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে ব্যাংকের বোর্ড অব এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরস।

বিশ্বব্যাংক আশা করছে, বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। বন্দরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে আমদানি রফতানি ব্যয় কমে যাবে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগও গতিশীল হবে বলে ধারণা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বে-টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট বা বে-টার্মিনাল সামুদ্রিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে সমুদ্রের পানির স্রোত চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া থেকে পোতাশ্রয়কে রক্ষা করতে ছয় কিলোমিটার জলবায়ুসহিষ্ণু ব্রেকওয়াটার বা বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পের অংশ হিসেবে বন্দরের প্রবেশদ্বার, অববাহিকা সংযোগকারী চ্যানেলগুলো ড্রেজিং করা হবে। নতুন আধুনিক বে-টার্মিনাল বিশ্বের শীর্ষ টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলো দ্বারা পরিচালিত হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে প্যানাম্যাক্স জাহাজের মতো বড় আকারের জাহাজ বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে। সেই সঙ্গে এসব জাহাজে মালামাল ওঠানো-নামানোর সময় কমবে। ফলে প্রতিদিন আনুমানিক মিলিয়ন বা ১০ লাখ মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ভুটানের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল্লায়ে সেক জানান, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল; কিন্তু বন্দরের সক্ষমতার সংকট আছে।

তিনি আরো বলেন, ‘বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী বিষয় হবে; বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবহন ব্যয় সময় হ্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের রফতানি প্রতিযোগিতা সক্ষমতার উন্নতি হবে, পরিবহন ব্যয় কমবে এবং বিশ্ববাজারে নতুন সুযোগ উন্মোচিত হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে বে-টার্মিনালে বেসরকারি বিনিয়োগের দ্বার উন্মোচিত হবে। সরকারি বিনিয়োগের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগের সম্মিলনে বে-টার্মিনালে বিনিয়োগ করার বিষয়ে বেসরকারি খাতের আগ্রহ তৈরি হবে। এছাড়া বেসরকারি খাতে নির্মিত একটি টার্মিনালে বিনিয়োগের বিষয়ে চিন্তা করছে বিশ্বব্যাংকের বেসরকারি খাতবিষয়ক প্রতিষ্ঠান আইএফসি বা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন।

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবহন বিশেষজ্ঞ প্রকল্পের প্রধান হুয়া টান বলেন, ‘ বে-টার্মিনাল বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর অবকাঠামোর আধুনিকীকরণ এবং আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংযোগ উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবে।

বে-টার্মিনালটি নির্মিত হবে সন্দ্বীপ চ্যানেলে। এর অবস্থান চট্টগ্রাম বন্দরের পশ্চিমে; টার্মিনাল থেকে ঢাকামুখী সড়ক কাছাকাছি। আশা করা হচ্ছে টার্মিনালে বাংলাদেশের ৩৬ শতাংশ কনটেইনার ওঠানামা করবে। শিপিং কোম্পানি, ব্যবসায়ী, আমদানি-রফতানিকারক, মালবাহী ফরোয়ার্ডারসহ ১০ লাখের বেশি মানুষ এর মাধ্যমে সরাসরি উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক সভায় বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘বে-টার্মিনালের দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বিদেশী বিনিয়োগ হচ্ছে। চারটি টার্মিনালের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হবে গ্যাস তেল খালাসের টার্মিনালে। বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ইস্ট কোস্ট গ্রুপ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। তাতে ৩৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ হবে।

তিনি আরো জানান, কনটেইনার পণ্য ওঠানো-নামানোর তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ হবে। এর মধ্যে ১৫০ কোটি ডলার করে বিনিয়োগ করে আলাদা দুটি টার্মিনাল নির্মাণ পরিচালনা করবে সিঙ্গাপুরে পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড। মাল্টিপারপাস নামের আরেকটি টার্মিনাল আবুধাবি পোর্টস নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে ১০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ হতে পারে। এছাড়া নৌপথ তৈরিতে ৫৯ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫