বরিশালে কালাবদর নদে ভাঙন ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে বাসিন্দারা

প্রকাশ: জুন ২৪, ২০২৪

এম. মিরাজ হোসাইন, বরিশাল

বরিশালের কালাবদর নদের তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কয়েকশ পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। অনেকে নদের তীরবর্তী স্থান থেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। নদের তীরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বছর ভাঙন দেখা দিলেও প্রতিরোধে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

সরজমিনে দেখা গেছে, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার জয়নগর, দরিচর খাজুরিয়া ও আন্ধারমানিক ইউনিয়নে নদের তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে তিনটি ইউনিয়নে নদের তীরের অনেক বাসিন্দা সহায়-সম্বল হারিয়েছে। এর মধ্যে আন্ধারমানিক গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবারের ঘরবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়েছে। এছাড়া জয়নগর ইউনিয়নের রহমানের হাট, নলবুনিয়া, চুনারচরেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়নের বামনের চর, দরিচর খাজুরিয়া গ্রাম দুটিও ভাঙনের কবলে পড়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে নলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দরিচর খাজুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরিফের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মসজিদ ও সড়কসহ বেশকিছু স্থাপনা। নদের ভাঙনে দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন টিকে রয়েছে একটি গ্রামের ওপর ভর করে। এ ইউনিয়নের বাকি তিনটি গ্রাম নদে বিলীন হয়ে গেছে আরো কয়েক বছর আগেই। ভাঙন অনেকের আঙিনায় চলে এসেছে। এ অবস্থায় ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে ভুক্তভোগীরা।

দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সোলায়মান ব্যাপারী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নদের ভাঙনে ভিটে হারিয়ে এখন অন্যের জায়গায় ঘর তুলে বসবাস করছি। জনপ্রতিনিধিরা ভাঙন রোধে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয় না। যুগের পর যুগ নদের ভাঙন দেখতে দেখতে আমরা এখন শক্ত হয়ে গেছি। কারো কাছে এখন আর কিছু বলি না।’

জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন হাওলাদার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধরনা দিয়েও নদের ভাঙন রোধে কোনো প্রকল্প পাইনি। ইউনিয়নের কয়েকশ ঘরবাড়ি, কয়েকটি স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদ ভাঙনের ঝুঁকিতে। মকবুলখার হাট থেকে নলবুনিয়া হয়ে দরিচর খাজুরিয়া পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটারে কয়েকশ পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ জানেন। তিনি কয়েকবার ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শনও করেছেন।’

এ বিষয়ে সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পদ্মা সেতুর ভারী যন্ত্রপাতি কালাবদ নদ দিয়ে পরিবহনের কারণে পাঁচ মিটার গভীরতায় ড্রেজিং করতে হয়েছে। ফলে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধের জন্য একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। শিগগিরই প্রকল্পটি পাস হলে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হবে।’

এ বিষয়ে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ বিন ওয়ালিদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘কালাবদর নদের তীরবর্তী জয়নগর, দরিচর খাজুরিয়া ও আন্ধারমানিক ইউনিয়নে ভাঙনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। এমনকি ওই এলাকায় ভাঙন রোধে কোনো প্রকল্পও নেই।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫