দেশে পশুর কাঁচা চামড়ার চাহিদার বড় অংশের জোগান হয় কোরবানির মৌসুমে। এবার চামড়া কেনা-বেচা নিয়ে তেমন কোনো সংকট দেখছেন না ব্যবসায়ীরা। তবে অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে কাঁচা চামড়ায় দ্রুত পচন ধরতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। এ কারণে কোরবানির পর পশুর চামড়ায় দ্রুত লবণ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, পচন রোধে ৪ ঘণ্টার মধ্যে চামড়ায় লবণ দিতে হয়, নতুবা চামড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সাধারণত ঈদুল আজহার সময় যে পশু কোরবানি হয়, তার কাঁচা চামড়া মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করেন। তাদের হাত ঘুরে তা যায় আড়তে। সেখানে কিছুটা প্রক্রিয়াজাত করার পর ট্যানারিগুলো সেই চামড়া কিনে নেয়। কাঁচা চামড়া যেন নষ্ট না হয়, সেজন্য লবণ মাখিয়ে রাখতে বরাবরই সংগ্রহকারীদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন আড়তদাররা।
তবে এবার এপ্রিলজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহের পর মে মাসে বৃষ্টির দেখা মিললেও গরম তেমন কমেনি। এ গরম নিয়েই চিন্তায় আছেন কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. টিপু সুলতান বলেন, ‘এবার কোরবানির ঈদে কাঁচা চামড়া সংগ্রহে তেমন কোনো সংকট দেখছি না। কেবল আবহাওয়াটা একটু দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
আবার বৃষ্টি হলেও আরেক সমস্যা জানিয়ে টিপু সুলতান বলেন, ‘বৃষ্টি হলে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের লোকজন খাটিয়ে চামড়া সংগ্রহ করতে বিপাকে পড়তে হয়। তবে বৃষ্টির ভালো দিকও আছে। এতে পশুর ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার হয়ে যায়, উৎকট গন্ধ থাকে না।’
এবার চামড়া সংরক্ষণে ব্যবহৃত লবণের সরবরাহ ও দাম নিয়ে সন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব বলেন, ‘লবণের দাম হাতের নাগালেই আছে। লবণ মজুদ রেখে সিন্ডিকেট করার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে না। ফলে সরকার চামড়ার দাম কিছুটা বাড়ালেও ব্যবসায়ীরা এ নিয়ে কোনো সংকট দেখছেন না।’
ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এক বস্তা (৭৪ কেজি) লবণে ১০০টির মতো পশুর চামড়া সংরক্ষণ করা যায়। কোনো কোনো বছর কোরবানির ঈদের মাস খানেক আগে থেকে বাজারে লবণের দাম বাড়তে দেখা যায়। গত বছর এক বস্তা লবণের দাম ছিল ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা। তবে এবার এক বস্তা লবণ বিক্রি হচ্ছে ৯৩০ টাকার মধ্যে।