ভারত চলতি বছরের মে মাসে রেকর্ড অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে। অটো ফুয়েলের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে পরিশোধনাগারগুলো আমদানি বাড়িয়েছে, যা দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মোট আমদানি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া রাশিয়া থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ সুবিধা থাকায় সম্প্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়িয়েছে ভারত। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন।
ভারতের পেট্রোলিয়াম প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যানালাইসিস সেল (পিপিএসি) জানিয়েছে, দেশটি গত মাসে অস্থায়ীভাবে মোট ২ কোটি ১৮ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে। মে মাসে ভারতের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি এপ্রিলের তুলনায় ২ শতাংশ এবং গত বছর থেকে ৬ শতাংশ বেশি।
এর আগে ভারতীয় পরিশোধনাগারগুলো ২০২২ সালের এপ্রিলে রেকর্ড ২ কোটি ১৬ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছিল। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২ কোটি ১৫ লাখ টন ও এপ্রিলে ২ কোটি ১৪ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে দেশটি।
চলতি বছরের মে মাসে রাশিয়া থেকে ভারত ১৭ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে। এর আগের মাসে এ আমদানির পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ৫০ হাজার টন।
এ বিষয়ে ভর্টেক্সার এপিএসি বিশ্লেষণের প্রধান সেরেনা হুয়াং বলেন, ‘মে মাসে রাশিয়া থেকে ভারত সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে। তবে এপ্রিলের তুলনায় তা কিছুটা কম হলেও গত বছরের জুলাইয়ের পর থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।’
ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ জ্বালানি তেল আমদানিকারক ও ব্যবহারকারী দেশ। তবে ভারতের জ্বালানি তেল পরিশোধন প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যয়বহুল লজিস্টিকসের কারণে কদাচিৎ রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কিনত। কিন্তু গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই দৃশ্যপটে বড় পরিবর্তন এসেছে। পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার ওপর কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে সেসব দেশে জ্বালানি তেল বিক্রি কমিয়েছে রাশিয়া। ক্ষেত্রবিশেষে বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিকল্প হিসেবে এশিয়ার বাজারকে বেছে নিয়েছে রাশিয়ার রফতানিকারকরা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে দেয়া হচ্ছে আকর্ষণীয় মূল্যছাড়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতের জ্বালানি তেল পরিশোধন প্রতিষ্ঠানগুলো রাশিয়া থেকে বর্তমানে জ্বালানি তেল আমদানির পরিমাণ বাড়িয়েছে।
অন্যদিকে বিশ্বের প্রধান অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিকারক চীন সম্প্রতি রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির পরিমাণ কমিয়েছে। যার কারণে দেশটি থেকে আরো বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির সুযোগ পাচ্ছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা।