শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা
বলেছেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবারের পবিত্র ঈদুল আজহায় চামড়া সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা
অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব হয়েছে। চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা
প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্স এবং শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিবিড় মনিটরিং
ও তদারকির কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।
সিনিয়র শিল্প সচিব আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন)
ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে বিসিক চামড়া শিল্পনগরী পরিদর্শনকালে উপস্থিত সাংবাদিকদের
প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন জাকিয়া সুলতানা। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সারাদেশ থেকে
আগত চামড়া সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা ও চামড়া শিল্প সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির নির্দেশনা
যথাযথভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তা সরেজমিন প্রত্যক্ষ করার জন্য তিনি এ পরিদর্শন করেন।
এ সময় সিনিয়র শিল্প সচিব বলেন, এবার বিসিক
চামড়া শিল্পনগরীর সিইটিপিকে পুরোপুরি প্রস্তুত ও কার্যকর করা হয়েছে। এর সবগুলো মডিউলকে
ওভারহোলিং তথা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মেরামতপূর্বক ঢেলে সাজানো হয়েছে।
প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দিয়ে তরল বর্জ্যকে পরিশোধন করা হয়েছে। তাছাড়া বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট
ব্যবস্থা চালু রয়েছে। প্রাথমিক পরিশোধন ছাড়া যাতে কোন ট্যানারির বর্জ্য সিইটিপিতে আসতে
না পারে, সেটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমাদের দেশে প্রতি
বছর ঈদুল আজহায় এক কোটি পশু কোরবানি হয়ে থাকে। তাছাড়া সারা বছর আরো এক কোটি পশুর চাহিদা
রয়েছে। সবমিলিয়ে দুই কোটি পিস চামড়ার সুষ্ঠু ও পরিবেশবান্ধব সংরক্ষণের জন্য চট্টগ্রামে ১টি ও ঢাকায় আরো ১টিসহ মোট ২টি সিইটিপি
নির্মাণ করা হবে। স্থানীয়ভাবে লবণ দিয়ে ভালোভাবে চামড়া সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সকল বিভাগীয়
কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের সভা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিসিক থেকে মাদ্রাসা
ও এমিতমখানাসমূহে বিনামূল্যে লবণ সরবরাহের পাশাপাশি সারাদেশে পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহের
ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহার সাত দিনের
মধ্যে ঢাকায় কাঁচা চামড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে যাতে বিসিক চামড়া শিল্পনগরীর সিইটিপির
ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না হয় এবং তারা যাতে সহজে ও পর্যায়ক্রমে চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত
করতে পারে। সিনিয়র সচিব এ সময় ক্রোম সেভিং ডাস্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য ইনসিনারেটর স্থাপনের
বিষয়ে বিসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
সিনিয়র শিল্প সচিব আরো বলেন, চামড়া শিল্প
বিষয়ে হাইকোর্টের চারটি নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে। বড় ট্যানারিগুলো
এরই মধ্যে ক্রোম রিকভারি ইউনিট (সিআরইউ) স্থাপন করেছে। পরিশোধনকৃত তরল বর্জ্যের মধ্যে
ক্রোমিয়াম ও বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (বিওডি) ছাড়া অন্যান্য প্যারামিটারগুলো
নির্দিষ্ট সীমার মধ্যেই রয়েছে। তিনি বলেন, পরিশোধনকৃত তরল বর্জ্যের সঠিক মান নির্ণয়
ও নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তরের পাশাপাশি সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও আমাদের নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে
পরীক্ষা করা হবে।
পরিদর্শনকালে বিসিকের চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা ও মো. শামীমুল হকসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।