সিরাজগঞ্জের হাটগুলোয় পশু সরবরাহ বাড়লেও বিক্রি কম

প্রকাশ: জুন ১৫, ২০২৪

অশোক ব্যানার্জী, সিরাজগঞ্জ

কোরবানির পশু বেচাকেনার জন্য সিরাজগঞ্জে ৫৭টি স্থানে হাট বসেছে। হাটগুলোয় পশু সরবরাহ বাড়লেও বেচাকেনা অনেকটা কম বলে জানিয়েছেন খামারিরা। বড় গরুর তুলনায় মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। তবে এসব গরুর দামও বেশি বলে জানান ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় পশু পালনে এ বছর খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ক্রেতারা দাম কমই বলছেন। সব মিলিয়ে কাঙ্ক্ষিত দামে পশু বিক্রি কঠিন হয়ে পড়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১৭ হাজার ১৩৪টি খামারে ছয় লাখের বেশি পশু পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ১ লাখ ৭৩ হাজার ১১০টি, বলদ ৩৩ হাজার ৬০৫, গাভী ১৫ হাজার ৭১৭, মহিষ ৩ হাজার ৬৮১টি, ছাগল ৩ লাখ ৩৮ হাজার ২৩৫ ও ভেড়া ৬০ হাজার ৫৮০টি। জেলায় এবার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় দুই লাখ।

এবার সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া কান্দাপাড়া ও রতনকান্দি, শাহজাদপুরের তালগাছি ও জামিরতা, উল্লাপাড়ার সলঙ্গা, বোয়ালিয়া, গ্যাস লাইন ও কয়ড়া, বেলকুচির সোহাগপুর ও শমেশপুর, রায়গঞ্জের চান্দাইকোনা ও পাঙ্গাসী, কাজীপুরের নাটুয়াপাড়া ও কামারখন্দসহ ৫৭টি স্থানে হাট বসেছে। এর মধ্যে মধ্যে অস্থায়ী হাট রয়েছে ২৮টি। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১০টি হাট বেশি বসেছে।

ব্যাপারী ও ইজারাদাররা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানির হাটে দেশী জাতের গরুর সংখ্যা বেশি। তবে লালন-পালন খরচ বাড়ায় গরুর দামও আগের চেয়ে বেশি।

সদর উপজেলার বিড়লাকুঠি মহল্লার এবি সিদ্দিক চান্দাইকোনা হাটে গরু কিনতে যান। তিনি জানান, গত বছরের তুলনায় এবার হাটে বেশি পরিমাণে দেশী জাতের গরু উঠেছে। গরুগুলো পছন্দসই। তবে দাম অনেক বেশি মনে হয়েছে। এজন্য এখান থেকে গরু কেনা সম্ভব হয়নি।

জয়পুরহাট থেকে ১৫টি গরু বিক্রির জন্য শাহজাদপুরের তালগাছি হাটে এনেছিলেন খামারি ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শাহজাদপুরের তালগাছি হাটে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারী আসেন। ভালো দাম পাওয়া যাবে, সে প্রত্যাশায় ১৫টি ষাঁড় এনেছিলাম। অনেক দামাদামির পর নয়টি ব্যাপারীদের কাছে ও ছয়টি সাধারণ ক্রেতার কাছে বিক্রি করেছি। যে দামে বিক্রি করেছি পরিবহন ও লালন-পালন খরচ বাদ দিলে তেমন লাভ হয়নি।

সদর উপজেলার কালিয়া কান্দাপাড়া পশুর হাটের ইজারাদার আকতারুজ্জামান বলেন, ‘কয়েক দিন আগে থেকে কোরবানির পশু এসে জড়ো হয়েছিল হাটে। প্রায় ১৫ হাজার পশু ছিল। ক্রেতার সংখ্যাও ছিল বেশি। তবে সে অনুপাতে বেচাকেনা হয়নি। মাঝারি আকারের পশুর চাহিদা বেশি। বিগত বছরগুলোর তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় পশু বিক্রি কম হচ্ছে।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওমর ফারুক জানান, বরাবরই সিরাজগঞ্জ জেলার পশুর চাহিদা থাকে দেশব্যাপী। সে বিষয়টি মাথায় রেখে হাটগুলো তদারকি করা হচ্ছে। অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত পশু যাতে হাটে বেচাকেনা না হয়, সেজন্য প্রতিটি উপজেলায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম তদারকি করছে। পশু পালনে খরচ বেড়েছে, তার পরও খামারিরা পশু বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জেলায় যেসব পশুরহাট ইজারা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।  ইজারা ছাড়া যদি কোথাও হাট বসানো হয় বা হাটে অনিয়ম হয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫