৪০ দিনে তৈরি বলিউডের যে কাল্ট ক্ল্যাসিক

প্রকাশ: জুন ০৭, ২০২৪

ফিচার ডেস্ক

বলিউডের জন্য সত্তরের দশককে গণ্য করা হয় স্বর্ণযুগ হিসেবে। সময়টিতে এমন কিছু ব্যবসাসফল সিনেমা মুক্তি পায়, যা পরবর্তী সময়ে পায় ‘কাল্ট ক্ল্যাসিক’ তকমা। সে তালিকায় ১৯৭৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘গোলমাল’ থাকবে প্রথম দিকেই। অথচ মাত্র ৪০ দিনে শেষ হয় সিনেমাটি। পরিচালক হৃষিকেশ এটি তৈরি করেন তার বিদ্যমান হতাশা থেকে উত্তরণের জন্য। অথচ এ সিনেমা এতটাই প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিল যে পরবর্তী সময়ে ছয়টি ভাষায় তা রিমেক হয়। 

গোলমাল মুক্তি পায় ১৯৭৯ সালে। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন হৃষিকেশ মুখার্জি। লিখেছেন রাহি মাসুম রেজা ও শচীন ভৌমিক। হিন্দি কমেডি ধাঁচের এ সিনেমার শীর্ষ চরিত্রগুলোয় অভিনয় করেছেন উৎপল দত্ত, অমল পালেকার, বিন্ধিয়া গোস্বামী, ডেভিড ও দেবেন বর্মা। সিনেমার গল্প আবর্তিত হয়েছে রামপ্রসাদ শর্মা (অমল) নামের এক চাকরিজীবীর চাকরি বাঁচানোর জন্য বলা একটা মিথ্যাকে ঘিরে। কেবল ওই মিথ্যার কারণে তাকে অবিরাম আরো মিথ্যা বলতে হয়, যা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে।  

বলিউড হাঙ্গামায় দেয়া সাক্ষাৎকারে হৃষিকেশ মুখার্জি জানান, এর আগে নির্মিত ‘আলাপ’ সিনেমা সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করলেও বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়। বিষয়টি তাকে আঘাত করে। অন্তত কয়েক মাস হতাশায় ডুবে থাকেন। সেই সময় নেহায়েত হতাশা থেকে বের হওয়ার জন্যই কমেডি ধাঁচের সিনেমাটি করেন তিনি। সিনেমার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বাংলা সিনেমা ‘কাঁচা মিঠা’ থেকে। বাংলা সিনেমাটিতে দেখা যায়, নায়ক তার একটা মিথ্যাকে ঢাকার জন্য পর পর মিথ্যা বলতে থাকে, যা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে। এ সূত্রই ছিল হৃষিকেশের অনুপ্রেরণা। মুখার্জি বলেন, ‘সিনেমাটি আমাকে এতটাই প্রভাবিত করে যে আমি সিদ্ধান্ত নিই, এ মিথ্যার জালকে কেন্দ্র করেই আমি একটা সিনেমা বানাব।’ 

মুখার্জির গোলমালের কাজ শেষ হয় মাত্র ৪০ দিনে। স্বপ্ন আর গুটি কয়েক অন্যান্য দৃশ্যের কথা বাদ দিলে পুরো সিনেমাই তৈরি হয়েছে তার বাংলোয়। সিনেমাটি করার ক্ষেত্রে রেখা ছিলেন তার প্রধান পছন্দ। কিন্তু খুব দ্রুত তিনি বুঝতে পারেন, এমন একটা সিনেমার জন্য রেখাকে রাখাটা তার প্রতি ন্যায়বিচার করা হবে না। কারণ সিনেমায় নায়িকার জন্য খুব বেশি সিন থাকবে না। যখন তিনি রেখাকে বিষয়টি অবগত করেন, তখন রেখা মর্মাহত হন। তবে হৃষিকেশ তখন আশ্বাস দেন, পরবর্তী সময়ে আরো ভালো কাজে তাকে নেয়া হবে। হৃষিকেশ তার কথা রেখেছিলেন। পরে ‘খুবসুরত’ সিনেমা তৈরি হলে সেখানে রেখাকে নেন তিনি। 

গোলমাল সিনেমার বাজেট ছিল ১ কোটি রুপি। কিন্তু বিশ্বব্যাপী সিনেমার আয় দাঁড়িয়েছিল ৭ কোটি রুপি, অর্থাৎ প্রায় ৬০০ শতাংশ লাভ। সে বছর মুক্তি পাওয়া সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমার একটা ছিল এ সিনেমা। একই গল্পের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সময়ে ছয়বার পুনর্নির্মিত হয়। রজনীকান্তের ‘থিল্লু মুল্লু’ ১৯৮১ সালে মুক্তি পায়, যা গোলমালের প্রথম রিমেক। পরে কন্নড় সিনেমা ‘আসেগোব্বা মিসেগোব্বা’ মুক্তি পায় ১৯৯০ সালে। ১৯৯৫ সালে তৈরি হয় মালয়ালাম সিনেমা ‘সিমহাভালান মেনন’ ও আরো পরে সিংহলি ভাষায় ‘রাসা রাসক’। এমনকি ২০১২ সালে রোহিত শেঠির ‘বোল বচ্চন’ অনেকটাই গোলমাল থেকে প্রভাবিত। বোল বচ্চন আবার ২০১৫ সালে তেলেগু ‘মাসালা’ সিনেমাকে প্রভাবিত করেছে। মাত্র ৪০ দিনে যে সিনেমা নির্মিত, তা গোটা বলিউডের ইতিহাসে তৈরি করেছে অনন্য নজির। 

সূত্র: ডিএনএ ইন্ডিয়া


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫