প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে কী কী সমস্যা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন।
ভিসাসহ অন্যান্য কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকার পরও সম্প্রতি উড়োজাহাজের টিকিট না পাওয়ায় কয়েক হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি। সংসদে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর কারণ জানতে চান বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কর্মসংস্থানের জন্য যাওয়া স্বাভাবিক বিষয়। অনেকেই গিয়ে থাকেন। সরকার বৈদেশিক কর্মসংস্থানে সহযোগিতা করে। কিন্তু কিছু লোক দালালের মাধ্যমে করেন, দালালের মাধ্যমে যেতে চান। যেতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে যান। এতে সমস্যা তৈরি হয়।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সরকার বিশেষ ফ্লাইট চালু করেছিল। বিশেষ ফ্লাইট ও অন্যান্য ফ্লাইটের সঙ্গে সংযুক্ত করে সবাইকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অনেকেই বাদ পড়েছেন। বাদ পড়ার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখনই আমরা আলোচনা করে ঠিক করি কত লোক যাবে, কীভাবে যাবে, তখনই দেখা যায় দেশের একশ্রেণীর লোক, যারা জনশক্তির ব্যবসা করে, তারা তড়িঘড়ি করে লোক পাঠানোর চেষ্টা করে। এদের সঙ্গে মালয়েশিয়ার কিছু লোকও যুক্ত আছে। এতে জটিলতা সৃষ্টি হয়। আবার সরকার যখন আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে যায়, তখনই কিছু লোক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। যারা যায় তাদের কাজের ঠিক থাকে না, চাকরিও ঠিক থাকে না, বেতনের ঠিক থাকে না, সেখানে গিয়ে বিপদে পড়ে। এটা শুধু মালয়েশিয়া না, অনেক জায়গায় ঘটে। এবার যে সমস্যা হচ্ছে, তা আমরা খতিয়ে দেখছি, কেউ দায়ী থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উন্মুক্ত জলাশয় স্থায়ী সংরক্ষণ ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হাওর অঞ্চলে মৎস্য ও জলজ অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এসব অভয়ারণ্যে মাছ শিকার পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।’
হবিগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব ধরনের দুর্গম এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিতকরণে মানবসম্পদের স্বল্পতা বিবেচনায় নিয়ে সেবার মান বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী জানান, নিরাপদ সাইবার স্পেস ও সাইবার অপরাধ দমনে বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সরকারের একটি আলাদা ‘সাইবার পুলিশ ইউনিট’ গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
মানুষকে দুর্যোগ থেকে রক্ষা করাই লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের লক্ষ্যই হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দেশ, দেশের মানুষ ও প্রকৃতিকে সুরক্ষিত রাখা। সুন্দর জীবন ও সুস্বাস্থ্যের জন্য সুন্দর পরিবেশ দরকার। কাজেই সেদিকে সবাই সচেতন হোন, সেটাই আমি চাই।’ প্রধানমন্ত্রী গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০২৪’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৪’ উপলক্ষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। এতে অন্যদের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বক্তব্য দেন।