যন্ত্রাংশ সরবরাহ

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজার দখলে নিচ্ছে চীন

প্রকাশ: জুন ০৩, ২০২৪

বণিক বার্তা ডেস্ক

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রযুক্তি খাত দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। ফলে অঞ্চলের সঙ্গে যন্ত্রাংশ সরবরাহকারীদের সম্পৃক্ততাও ক্রমাগত বাড়ছে, যাদের অধিকাংশই চীননির্ভর। বাজার বিশ্লেষকদের অভিমত, যন্ত্রাংশ সরবরাহ খাতে ক্রমে নিজেদের শক্ত অবস্থান হারাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে থাকা তাইওয়ান। খবর টেকটাইমস।

যুক্তরাষ্ট্র চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধের কারণে গুগল প্রথমে তাদের পণ্য সরবরাহের জন্য ফক্সকন, কম্পাল ইলেকট্রনিকস, কোয়ান্টা কম্পিউটার, পেগাট্রন ইনভেনটেকের কাছে কার্যক্রম স্থানান্তর করে। পরবর্তী সময়ে চীনের দুই কোম্পানি গোয়েরটেক বিওয়াইডিও এতে যুক্ত হয়।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ২০২৫ সাল নাগাদ ভিয়েতনামে পিক্সেল ওয়াচ উৎপাদন করবে গোয়েরটেক এবং এর মাধ্যমে তাইওয়ানের উৎপাদনকারীদের জায়গা দখলে নেবে কোম্পানিটি। নিক্কেই এশিয়া প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বিওয়াইডিও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পিক্সেল ফোন উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, চীনের কাছাকাছি থাকার পাশাপাশি শ্রমশক্তিতে খরচ কম থাকায় উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন কোম্পানির পছন্দের শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। অ্যাপলের বর্তমান সরবরাহকারীদের তালিকা অনুযায়ী, বর্তমানে ৩৭ শতাংশ চীনা যন্ত্রাংশ বিক্রেতা ভিয়েতনামে অবস্থান করছে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মন্দার কারণে অনেক চীনা কোম্পানি অন্যান্য দেশে তাদের কার্যক্রম স্থানান্তর করছে। তাইওয়ানের অন্যতম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাক্টারের মহাব্যবস্থাপক লাই মিং-কুয়েন জানান, চীনের কোম্পানিগুলো সাশ্রয়ীমূল্যে কাজ করে থাকে এবং স্থানীয় সরকারের সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

অ্যাডভানটেকসের ভিনসেন্ট চ্যাংয়ের তথ্যানুযায়ী, চীনের কোম্পানিগুলো এখন আর দ্বিতীয় স্তরের সরবরাহকারী নয়। এছাড়া কম খরচে নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করার যে দুর্নাম ছিল, সেটিও কাটিয়ে উঠেছে। চীন তাইওয়ানের কোম্পানিগুলোর মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার বিষয়টিও স্বীকার করেছেন তিনি। কেননা চীন বর্তমানে আরো বেশি সম্পদের উৎস অনুসন্ধানের পাশাপাশি গ্রাহক আকৃষ্টে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।

প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড উৎপাদনে প্রতিযোগিতার বিষয়টি স্পষ্ট। কেননা বর্তমানে থাইল্যান্ডের ৫৫টি কোম্পানির ৩৩টিতেই চীনের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করছে। তাইওয়ান প্রিন্টেড সার্কিট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মরিস লি জানান, গ্রাহকদের মন জয় করার স্বাভাবিক কৌশল হলো দাম কমানো।

আসিয়ানের তথ্যানুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৫০টির বেশি প্রযুক্তি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বর্তমান বাজারমূল্য ১০০ কোটি ডলারের বেশি। এদের মধ্যে সিঙ্গাপুরের কারো, ভিয়েতনামের মোমো ইন্দোনেশিয়ার গোটু গ্রুপ উল্লেখযোগ্য।

কভিড-১৯ মহামারী-পরবর্তী সময়ে -কমার্স, খাদ্য সরবরাহের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, অর্থায়ন ব্যাংকিং খাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ সাল নাগাদ অঞ্চলটির ডিজিটাল অর্থনীতি ৩৩ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া অনলাইনে কেনাকাটার কারণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় -কমার্সও উল্লেখযোগ্য হারে এগিয়েছে।

অন্য এক পূর্বাভাসে ব্লুমবার্গ ইকোনমিকস জানায়, ২০২৬ সাল নাগাদ চীনের আবাসন খাতকে ছাড়িয়ে যাবে হাই-টেক প্রযুক্তি খাত। অর্থনীতিবিদ চ্যাং মু এরিক ঝুয়ের প্রত্যাশা ২০২৬ সাল নাগাদ চীনের জিডিপিতে হাই-টেক খাতের অবদান থাকবে ১৯ শতাংশের বেশি।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫