গাজায় সংঘাতের অবসান ঘটাতে হামাসকে
দেয়া ইসরায়েলের নতুন প্রস্তাব মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট
জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘এ যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় এসেছে।’ সঙ্গে আরো জানান, হামাস যুদ্ধবিরতি চায় কিনা প্রমাণের সুযোগ এসেছে। খবর বিবিসি।
তিন ধাপে বিভক্ত এ প্রস্তাবের শুরুতেই
রয়েছে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি। এ সময় ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজার জনবহুল
এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে। মানবিক সাহায্যের পাশাপাশি ফিলিস্তিনি বন্দিদের সঙ্গে
জিম্মি বিনিময়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
চুক্তিটি শেষ পর্যন্ত স্থায়ী ‘শত্রুতা
বন্ধ’ এবং গাজার জন্য একটি বড় পুনর্গঠন পরিকল্পনার দিকে এগিয়ে যাবে বলেও জানানো হয়।
হামাস জানিয়েছে, সাম্প্রতিক এ প্রস্তাবকে
‘ইতিবাচকভাবে’ দেখছে।
গতকাল শুক্রবার (৩১ মে) হোয়াইট হাউসে
বক্তৃতায় জো বাইডেন জানান, প্রস্তাবিত পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে ‘পূর্ণ ও সম্পূর্ণ
যুদ্ধবিরতি’, জনবহুল এলাকা থেকে আইডিএফ বাহিনী প্রত্যাহার ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের সঙ্গে
জিম্মি বিনিময় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘হামাস বলে আসছে, তারা যুদ্ধবিরতি
চায়। তারা সত্যি তা চায় কিনা এ চুক্তি সেটা প্রমাণ করার একটি সুযোগ।’
সঙ্গে যোগ করেন, যুদ্ধবিরতি ‘প্রতিদিন
৬০০ ট্রাক গাজায় সাহায্য নিয়ে যাওয়া’সহ আরো মানবিক সহায়তা বিপর্যস্ত অঞ্চলে পৌঁছানোর
অনুমতি দেবে।
এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ হামাসকে প্রস্তাবে
সম্মত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন
এক্স বার্তায় বলেন, ‘হামাসকে অবশ্যই প্রস্তাবটি মেনে নিতে হবে।’
জো বাইডেনকে উদ্যোগের জন্য স্বাগত জানিয়েছে
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক্স বার্তায় বলেন, ‘বিশ্ব গাজায় অনেক দুর্ভোগ
ও ধ্বংস প্রত্যক্ষ করেছে। এটি থেমে যাওয়ার সময় এখন।’
তবে জো বাইডেন বক্তৃতায় এও স্বীকার
করেন যে, চুক্তির প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে আলোচনা কঠিন হবে। তার মতে, কিছু ইসরায়েলি
ও সরকারি কর্মকর্তারাসহ অনেকে এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করবে।
প্রস্তাবের তৃতীয় ধাপে মৃত ইসরায়েলি
জিম্মিদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে গাজায় বাড়ি, বিদ্যালয়
ও হাসপাতাল পুনর্নির্মাণের জন্য মার্কিন ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় একটি ‘বিশদ পুনর্গঠন
পরিকল্পনা’ হবে।
গত অক্টোবরের শুরুতে ইসরায়েলের নজিরবিহীন
হামলায় চালায় গাজাকেন্দ্রিক স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এ সময় ১ হাজার ২০০ জনের মতো
ইসরায়েলি নিহত হন। জিম্মি হিসাবে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয় আড়াইশ জনকে। এর পর থেকে চলমান
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের প্রায় ৮০ শতাংশই
নারী ও শিশু।