তাপপ্রবাহে ফলন কম

রাজশাহীতে মৌসুমের শুরুতে কিছুটা বেড়েছে আমের দাম

প্রকাশ: মে ২৭, ২০২৪

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রাজশাহী

তাপপ্রবাহের কারণে এবার রাজশাহীতে আমের ফলন কম হয়েছে। এজন্য মৌসুমের শুরুতে দামটাও বাড়তি। ম্যাংগো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ১৫ মে থেকেই স্বল্প পরিসরে গুটি জাতের আম বাজারজাত শুরু হয়েছে। তবে আবহাওয়াজনিত কারণে এবার আম নির্ধারিত সময়ে পরিপক্ব না হওয়ায় বাজার এখনো জমে ওঠেনি। পাইকারি ও বাগান থেকে গোপালভোগ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি। তবে আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে থেকে ভোক্তাদের কিনতে হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে।

বিক্রেতাদের দাবি, তীব্র তাপপ্রবাহে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেচ ও সারসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় গোপালভোগ আমের দাম এবার একটু বেশি। তবে হীমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি ও লখনা আমবাজারে এলে গোপালভোগের দাম কিছুটা কমবে। জ্যৈষ্ঠের প্রথমার্ধের গোপালভোগের চাহিদা বেশি থাকে এবং তাড়াতাড়ি বাগান থেকে শেষও হয়ে যায়; তাই এর দাম এবার কিছুটা বেশি।

সাধারণত গুটিজাতের (চোষা) আম দিয়ে প্রতি বছর মৌসুম শুরু হলেও গোপালভোগের জন্য অপেক্ষা করতে হয় চাষী, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাকে। কারণ গোপালভোগ দিয়েই রাজশাহীর আমবাণিজ্য জমে ওঠে। এরপর এক এক করে বাজারে আসতে শুরু করে হরেক রকম নাম ও স্বাদের আম। সব মিলিয়ে এ বছর নির্ধারিত ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ মেনে আম নামানো পুরোদমে শুরু না হলেও আগামী সপ্তাহ থেকে হাটবাজার ভরে উঠবে বলে আশা করছেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহীর হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, স্বল্প পরিমাণে লখনা  (লক্ষণভোগ) ও গুটি (আচারি আম) আম উঠেছে। বানেশ্বর বাজারে গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে। এক মণ আম বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায়। বাগানেও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। তবে রাজশাহীর সাহেব বাজার, শালবাগান, বাস টার্মিনাল ও নগরীর লক্ষ্মীপুরের ফলের মোকামগুলোয় গোপালভোগ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি। অন্যদিকে লক্ষ্মণভোগ বা লখনা বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা এবং শেষদিকে গুটি বা আচারি আম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে।

তবে প্রতি বছর প্রথম দিকে গোপালভোগ আম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। দাম ধীরে ধীরে বেড়ে গিয়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। কিন্তু এবার বাজারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। প্রথম দিকেই বাজারে নামানো গোপালভোগ আমের দাম হাঁকা হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা।

রাজশাহী কাটাখালী পৌর এলাকার আমচাষী পারভেজ মোশাররফ বলেন, ‘এবার মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে পুরো এপ্রিল কেটেছে তাপপ্রবাহে। প্রচণ্ড তাপে গাছ থেকে আমের গুটি ঝরে পড়েছে। তাই ফলন কম। অন্যদিকে আবহাওয়ার তারতম্য থাকায় সব এলাকায় একসঙ্গে এবার গোপালভোগ আম পরিপক্ব হয়নি। এ কারণে একযোগে সবাই এখনো বাগান থেকে আম পুরোদমে নামানো শুরু করেনি। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে প্রায় সব বাগানেই আম পাড়া শুরু হবে।’

রাজশাহী মহানগরের সবচেয়ে বড় মোকাম শালবাগান বাজার। এখানকার আম ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বাজারে অল্পসংখ্যক গোপালভোগ আম এসেছে। তবে ফলন কম হওয়ায় দাম বেশি। শুরুতেই ৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে গোপালভোগ। এ আম মিষ্টি হওয়ায় প্রতি বছর মৌসুমের শুরুতে চাহিদা বেশি থাকে। এবারো চাহিদা প্রচুর। কিন্তু সরবরাহ কম; তাই দামটা বেশি।’

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (গবেষণা) উম্মে ছালমা বলেন, ‘রাজশাহী জেলায় বাণিজ্যিক চাষী বেশি। তারা গুটি আম খুব একটা চাষ করেন না। এখানে যা উৎপাদন হয় তার প্রায় সবই ভালো মানের আম।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫