খাবারের দাম কমিয়েছে যুক্তরাজ্যের ফাস্ট ফুড বিক্রেতারা

প্রকাশ: মে ২৩, ২০২৪

বণিক বার্তা ডেস্ক

মূল্যস্ফীতির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে যুক্তরাজ্যে। এতে বেড়েছে ভোক্তা ব্যয়। প্রতিদিনের ব্যয় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে স্বল্প নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ। ফলে রাস্তার ধারের স্বল্পমূল্যের খাবার বেছে নিচ্ছে তারা। এ সুযোগ কাজে লাগাতে সকালের নাশতা ও দুপুরের খাবারের দাম কমিয়েছে দেশটিতে ব্যবসা পরিচালনাকারী চেইন শপগুলো। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

মূল্যস্ফীতির প্রভাবে জনপ্রিয় কফিশপগুলোয় একটি স্যান্ডউইচ, স্ন্যাকস ও একটি পানীয়র দাম উঠেছে ১০ ইউরো পর্যন্ত। এছাড়া মধ্যমানের সুপারমার্কেটগুলোয়ও কভিড মহামারীপূর্ব সময়ের তুলনায় খাবারের দাম বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ পর্যন্ত। তবে সে শূন্যতা পূরণে এগিয়ে আসছে ফাস্ট ফুড চেইন শপগুলো।

চলতি বছরের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্ট চেইন কেএফসি ৫ দশমিক ৪৯ পাউন্ডের একটি লাঞ্চ প্যাকেজ চালু করেছে। যার মধ্যে রয়েছে একটি ফ্রাইড চিকেন ওয়ার্প, একটি পানীয় ও একটি ক্রিপস বা কুকি। প্রতি সোম-শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত গ্রাহকরা স্বল্পমূল্যের এ প্যাকেজ গ্রহণ করতে পারবেন।

গত মাসে মার্কিন বহুজাতিক পিৎজা চেইন শপ ডমিনো’স একই পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। যুক্তরাজ্যের বাজারে মাত্র ৪ পাউন্ডে লাঞ্চ প্যাকেজ চালু করেছে কোম্পানিটি।

ডমিনো’সের একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপন চিত্রে দেখানো হয়, একজন কর্মী তার সহকর্মীদের লুকিয়ে ৪ ইউরো দামের একটি পিৎজা অফিসে নিয়ে আসছেন।

ডমিনো’সের মার্কেটিং ডিরেক্টর হ্যারি ড্রোমি তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিযোগীদের লাঞ্চ চুরি করার জন্য খুঁজছি।’ গত মাসে কোম্পানিটি ঘোষণা করেছিল, ২০৩৩ সালের মধ্যে তারা আরো ৭০০টি স্টোর খোলার পরিকল্পনা করছে।

জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিজনিত সংকটের কারণে সাশ্রয়ী মূল্যের খাবারের চাহিদা ক্রমেই বেড়ে চলেছে যুক্তরাজ্যে। গত বছর ব্রিটিশ বেকারি চেইন গ্রেগস রেকর্ড পরিমাণ প্রি-ট্যাক্স মুনাফা অর্জন করেছে। ম্যাকডোনাল্ডকে পেছনে ফেলে ২০২৩ সালে কোম্পানিটি ব্রেকফাস্ট মার্কেটের ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ অধিকার করেছে। ফলে বাজারে নিজেদের স্টোরের সংখ্যা আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে কোম্পানিটি। গ্রেগস তাদের নতুন অফারে ২ দশমিক ৮৫ পাউন্ডে সকালের নাশতা ও ৩ দশমিক ৬০ পাউন্ডে দুপুরের খাবার প্যাকেজ চালু করেছে।

তবে সস্তা খাবার নিয়ে কেএফসি ও ডমিনো’সের মতো ফাস্ট ফুড চেইনগুলোকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

ডায়েটিশিয়ান ও ব্রিটিশ ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র আইসলিং পিগট বলেন, ‘‌এ অপশনগুলো প্রতিদিনের পুষ্টিকর মেনু নয়। অনেক খাবারের মধ্যে চর্বি বা চিনির পরিমাণ বেশি রয়েছে এবং খুব অল্প পরিমাণ ফাইবার বা আঁশ রয়েছে।’

উন্নত খাদ্য ও কৃষিকাজের প্রচারণা চালানো সংস্থা ফ্রান বার্নহার্ড সম্প্রতি জাঙ্ক ফুডের বিজ্ঞাপনের জন্য ওয়াটারশেডের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, অন্যান্য আউটলেটে দাম ও স্বাস্থ্যকর অপশনগুলোর দাম বাড়ায় যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা পূরণ করছে ফাস্ট ফুড আইটেম, যা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যকর নয়।

ভোক্তারা বলছে, ‘‌আমাদের অনেকের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। অস্বাস্থ্যকর খাবারের বন্যা আমাদের অপশনগুলোকে সংকুচিত করে ফেলছে।’

খাদ্য পরিষেবা খাতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান মিনিংফুল ভিশনের তথ্যমতে, ফাস্ট ফুড চেইন শপগুলো ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে তাদের প্রচার-প্রচারণা ১৫ শতাংশ বাড়িয়েছে আর ২০২৪ সালে এসে প্রচারণামূলক কার্যক্রম আরো বেড়ে ২০ শতাংশে পৌঁছেছে। এ প্রচারণার বেশির ভাগই ফাস্ট জাতীয় খাবারের অফার।

মিনিংফুল ভিশনের প্রধান নির্বাহী মারিয়া ভ্যানিফাতোভা বলেন, ‘‌ফাস্ট-ফুড অপারেটরদের মাধ্যমে খাবারের অফার বৃদ্ধির মানে হলো ভোক্তারা অর্থনৈতিকভাবে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫