দেশী ব্যাংকের ব্যর্থতায় ব্যবসা ও মুনাফা বাড়ছে বিদেশী ব্যাংকের

প্রকাশ: মে ১৪, ২০২৪

হাছান আদনান

উচ্চ খেলাপি ঋণ, ভঙ্গুর মূলধন কাঠামো আর অদক্ষ ব্যবস্থাপনায় ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে দেশী ব্যাংকগুলো। মুনাফা কমে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যবসাও সংকুচিত হয়ে আসছে দেশের অনেক ব্যাংকের। দেশী ব্যাংকের ব্যর্থতার সুযোগে ব্যবসা ও মুনাফা বাড়ছে বিদেশী ব্যাংকগুলোর। ২০২৩ সালে দেশে কার্যক্রম চালানো প্রায় সবক’টি বিদেশী ব্যাংকই রেকর্ড মুনাফা পেয়েছে। এসব ব্যাংক চলতি বছরও ভালো ব্যবসা করছে।

দেশে কার্যক্রম চালানো বিদেশী ব্যাংকগুলোর নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে রেকর্ড ২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। দেশের ব্যাংক খাতের ইতিহাসে এর আগে কোনো ব্যাংকই এ পরিমাণ নিট মুনাফা করতে পারেনি। ২০২২ সালেও বহুজাতিক ব্যাংকটির নিট মুনাফা হয়েছিল ১ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত বছর ব্যাংকটির নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪১ শতাংশ। নিট মুনাফায় ৭০ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি পেয়েছে হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেড (এইচএসবিসি)। বহুজাতিক ব্যাংকটি ২০২৩ সালে ৯৯৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। এর আগের বছর এইচএসবিসির নিট মুনাফা ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে নয়টি বিদেশী ব্যাংক। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও এইচএসবিসির ব্যবসা ও কার্যক্রমই বেশি বিস্তৃত। এছাড়া শ্রীলংকার কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, যুক্তরাষ্ট্রের সিটিব্যাংক এনএ, দক্ষিণ কোরিয়ার উরি ব্যাংক ও ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ারও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কার্যক্রম রয়েছে। এক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে পাকিস্তানভিত্তিক ব্যাংক আল ফালাহ্ ও হাবিব ব্যাংক। এর মধ্যে দেশে ব্যাংক আল ফালাহ্‌র কার্যক্রম অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি খাতের ব্যাংক এশিয়া। আর খেলাপি ঋণের ভারে বিপর্যস্ত ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এখন প্রায় দেউলিয়া দশায়। 

ব্যাংকগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত বছর উরি ব্যাংক ছাড়া সবক’টি ব্যাংকেরই মুনাফা বেড়েছে। এর মধ্যে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের মুনাফা বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। গত বছর ব্যাংকটির বাংলাদেশ অফিস ৪৩৮ কোটি টাকার নিট মুনাফা করেছে। একই সময়ে ২৭৭ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে সিটিব্যাংক এনএ। আর স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া নিট মুনাফা করেছে ২৩৪ কোটি টাকা।

দেশী ব্যাংকগুলোর ব্যর্থতার কারণেই বিদেশী ব্যাংকের মুনাফা বাড়ছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর মুহাম্মদ এ (রুমী) আলী। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘বিদেশী ব্যাংকগুলোর আমানত সংগ্রহ ব্যয় সর্বনিম্ন। তাদের হাতে এখন বিনিয়োগযোগ্য পর্যাপ্ত তারল্যও রয়েছে। এ অর্থ সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডের মতো নিরাপদ বিনিয়োগ করলেও উচ্চ মুনাফা পাবে। কিন্তু দেশী ব্যাংকগুলোর সে অবস্থা নেই। তারল্য সংকটের কারণে তাদের উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আবার সুশাসনের ঘাটতি ও আস্থাহীনতার কারণে প্রথম প্রজন্মের অনেক ব্যাংকের অবস্থাও এখন নাজুক। উচ্চ সুদের প্রস্তাব দিয়েও তারা আমানত সংগ্রহ করতে পারছে না।’

ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ দেশের ব্যাংক খাতের ‘কোমর ভেঙে দিয়েছে’ বলে মনে করেন রুমী আলী। তিনি বলেন, ‘দেশের বেশির ভাগ ব্যাংকের মূলধন কাঠামো আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নয়। আবার খেলাপি ঋণ বেশি হওয়ায় দেশের অনেক ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে আছে। এ কারণে ব্যাংকগুলোর পক্ষে বড় কোনো বিনিয়োগ বা এলসি খোলাও সম্ভব হচ্ছে না। এ সুযোগেরই সদ্ব্যবহার করছে বিদেশী ব্যাংকগুলো। তারা স্বল্প কমিশনে এলসি খুলতে পারছে। আর দেশী ব্যাংকগুলো এলসি খুললে তৃতীয় পক্ষের কনফার্মেশন লাগছে।’ 

দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিশোধিত মূলধন ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা। মূলধন বেশি হওয়ায় প্রথম প্রজন্মের এ ব্যাংকটির বড় বিনিয়োগ ও এলসি খোলার সক্ষমতাও ছিল বেশি। কিন্তু গত এক যুগের অনিয়ম-দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত ব্যাংকটি এখন মূলধনই খুইয়ে ফেলেছে। ২০২২ সালে রেকর্ড ৩ হাজার ২৬০ কোটি টাকা নিট লোকসান দেয়ার পর গত বছর আরো ১ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে ব্যাংকটি। তীব্র তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকটির বড় ঋণ বিতরণ ও এলসি খোলা প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।

সম্পদ ও দায়ের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। গত বছর শেষে ব্যাংকটির সম্পদ ও দায়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ লাখ ৩ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা। এত বড় সম্পদ নিয়েও ২০২৩ সালে মাত্র ৬৩৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা পেয়েছে ব্যাংকটি।

প্রথম প্রজন্মের এ দুই ব্যাংকের মতো দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর বড় অংশেরই মুনাফা পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। আর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ, ব্যবস্থাপনা মান ও মুনাফা পরিস্থিতি আরো খারাপ। কোনো ব্যাংক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কতটা শক্তিশালী সেটি তার মূলধন কাঠামোর ওপর নির্ভর করে। আন্তর্জাতিকভাবে চর্চিত ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী, দেশের ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণের হার (সিআরএআর) হওয়ার কথা সাড়ে ১২ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ দেশের অনেক বেসরকারি ব্যাংকও এ মূলধন সংরক্ষণ করতে পারেনি। গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সিআরএআর ছিল গড়ে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর গড় হার ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ থাকলেও বিদেশী ব্যাংকগুলো এক্ষেত্রে ৩৫ দশমিক ৭২ শতাংশ হারে সিআরএআর সংরক্ষণ করতে পেরেছে। 

দেশী ব্যাংকগুলোর ব্যর্থতার কারণ জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিদেশী ব্যাংকের তুলনায় দেশী ব্যাংকের সম্পদের মান দুর্বল। দেশী ব্যাংকগুলোর কস্ট অব ফান্ড বেশি কিন্তু ইল্ড কম। অন্যদিকে বিদেশী ব্যাংকগুলোর কস্ট অব ফান্ড খুবই কম কিন্তু ইল্ড বেশি। অল্প কয়েকটি শাখা ও লোকবল নিয়ে বিদেশী ব্যাংকগুলো কাজ করে। এসব কারণে দেশী ব্যাংকের তুলনায় বিদেশী ব্যাংকের মুনাফা অনেক বেড়ে যাচ্ছে।’

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও দেশের কোনো ব্যাংকের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করতে না পারাকে বড় ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তিনি। সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ছোট একটি বাজারে অর্ধশতাধিক ব্যাংক প্রতিযোগিতা করছে। এ কারণে কেউ প্রত্যাশাকে ছাড়াতে পারেনি। বিদেশী ব্যাংকগুলোর সম্পদ ও দায় ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো। এ কারণে দেশের ভালো গ্রাহকরা বিদেশী ব্যাংকে চলে যান। আমরা মন্দের ভালো গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যবসা করতে বাধ্য হই।’

১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামে শাখা খোলার মাধ্যমে এ অঞ্চলে কার্যক্রম শুরু করে বহুজাতিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকটি মাত্র ১৮টি শাখা ও একটি ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডো নিয়ে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০২৩ সাল শেষে ব্যাংকটির মোট সম্পদ ও দায়ের পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। বিতরণকৃত ঋণের স্থিতি ৩০ হাজার কোটি টাকারও কম। এ পোর্টফোলিও নিয়েও দেশে ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিট মুনাফা করছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। গত তিন বছরে টানা বড় অংকের মুনাফা করেছে ব্যাংকটি। ২০২১ সালে ব্যাংকটির নিট মুনাফা ছিল ৭৫৮ কোটি টাকা। ২০২২ সালে তা ১ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। আর গত বছর তা আরো বেড়ে দাঁড়ায় রেকর্ড ২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকায়। 

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সুদ খাত থেকে ব্যাংকটির আয় আগের বছরের তুলনায় গত বছর বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। ২০২২ সালে এ খাত থেকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের নিট আয় ছিল ১ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। গত বছর তা ২ হাজার ১৮ কোটি টাকা ছাড়ায়। সরকারের ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ থেকেও ব্যাংকটির আয় বেশ বেড়েছে। ২০২২ সালে এ খাত থেকে ৭৩৫ কোটি টাকা আয় করলেও গত বছর তা ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবে গত বছর কমিশন, এক্সচেঞ্জ ও ব্রোকারেজ থেকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের আয় কিছুটা কমেছে। ২০২২ সালে এ খাত থেকে ১ হাজার ৩৭ কোটি টাকা আয় করলেও গত বছর তা ১ হাজার ২৪ কোটি টাকায় নেমে আসে। সব মিলিয়ে ২০২৩ সালে ৪ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা পরিচালন আয় করেছে ব্যাংকটি। এর আগের বছর স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের পরিচালন আয় ছিল ৩ হাজার ৫০ কোটি টাকা।

বহুজাতিক ব্যাংকটির বিনিয়োগের বিপরীতে গত বছর আয়ের (আরওআই) অনুপাত ছিল ২০ দশমিক ৯১ শতাংশ। আর সম্পদের বিপরীতে আয় (আরওএ) হয়েছে ৪ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। যদিও দেশের ব্যাংকগুলো গুরুত্বপূর্ণ এ দুই সূচকে খুবই নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছে। দেশের সবচেয়ে ভালো বেসরকারি ব্যাংকের আরওআই ৬ শতাংশেরও নিচে। আরওএর ক্ষেত্রে এ হার সর্বোচ্চ ২ শতাংশের ঘরে।

এ বিষয়ে গতকাল স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নাসের এজাজ বিজয়ের বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি। তবে এর আগে তিনি বণিক বার্তাকে বলেছিলেন, ‘গ্রাহকদের সাফল্য, সুশাসন ও উন্নত আর্থিক সমাধান—এ তিনটি ছিল ২০২৩ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের আর্থিক ফলাফলের স্তম্ভ। বিচক্ষণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, তারল্যের সুব্যবহার, উন্নত অর্থায়ন এবং গ্রাহক, সহকর্মী, নিয়ন্ত্রক ও অন্য স্টেকহোল্ডারদের সমর্থন একটি চ্যালেঞ্জিং বছরেও আমাদের ভালো ফলাফল অর্জনে সাহায্য করেছে।’

তিনি জানান, গত বছর স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার আমানত ও ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ বেড়েছে। ব্যাংকটির ক্যাপিটাল বেইস আর্থিক খাতে সর্বোচ্চ (১১ হাজার কোটি টাকার বেশি) এবং মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত (সিআরএআর) নিয়ন্ত্রক প্রয়োজনীয়তা ও আর্থিক খাতের গড়ের চেয়ে তিন গুণ বেশি।

দেশের ব্যাংকগুলোয় তারল্য সংকট চলছে দুই বছর ধরে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডসহ প্রথম সারির বিদেশী ব্যাংকগুলো এ সংকট থেকে পুরোপুরি মুক্ত। তারল্য সংকটের কারণে দেশের ব্যাংক ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় ১৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আর সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার ছাড়িয়েছে ১২ শতাংশ। এ অবস্থায় ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগ করেও উচ্চ মুনাফা পাচ্ছে বিদেশী ব্যাংকগুলো। গত বছর শেষে সরকারি বিল-বন্ডে শুধু স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের বিনিয়োগ ছিল ২১ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। একই সময়ে সরকারি বিল-বন্ডে ২ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ ছিল কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের। সিটিব্যাংক এনএ ১ হাজার ৭৭৫ কোটি ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ৯৪৬ কোটি টাকা সরকারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করেছে।

দেশী-বিদেশী উভয় ধরনের ব্যাংকেরই শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের। একসময় তিনি বহুজাতিক সিটিব্যাংক এনএর বাংলাদেশ অফিসের প্রধান ছিলেন। পরে দেশের দুটি বেসরকারি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। বিদেশী ব্যাংকগুলোর ব্যবসা ও মুনাফার বিষয়ে জানতে চাইলে রাশেদ মাকসুদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি যেকোনো ব্যাংকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে দেশের অনেক ব্যাংকেরই ঘাটতি আছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডে আমানত রেখে কেউ ভুলেও তা ফেরত পাওয়া নিয়ে চিন্তায় থাকে না। কিন্তু দেশের অনেক ব্যাংকের ক্ষেত্রেই আমানত ফেরত পাওয়া নিয়ে গ্রাহকদের চিন্তা করতে হচ্ছে। কোনো প্রকার সুদ বা লাভের প্রত্যাশা ছাড়াই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডে মানুষ আমানত রাখছে। এ কারণে তাদের তহবিল সংগ্রহের ব্যয় খুবই কম। সরকারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করেও তারা উচ্চ মুনাফা করতে পারছে। বিতরণকৃত ঋণ, বিনিয়োগ, কমিশন, অফশোর ব্যাংকিংসহ সব খাত থেকেই বিদেশী ব্যাংকগুলোর আয় বাড়ছে।’ 

খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, ‘মানুষ এখন লাভের চেয়েও আমানতের নিরাপত্তাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এ কারণে ভালো ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃত এমন দেশী ব্যাংকেও আমানত বেড়েছে। অন্যদিকে বিতর্কের মুখে পড়া ব্যাংকগুলোর আমানত ক্রমেই কমে যাচ্ছে। উচ্চ সুদের প্রস্তাব দিয়েও দুর্বল ব্যাংকগুলো আমানত বাড়াতে পারছে না।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫