ফ্যারিনজাইটিস

প্রতিরোধে করণীয়

প্রকাশ: মে ১৩, ২০২৪

ডা. এম আর ইসলাম

গলা ব্যথার কারণগুলোর মধ্যে প্রধান হলো ফ্যারিনজাইটিস। খাবার ও ঢোক গিলতে অসুবিধাসহ প্রচণ্ড জ্বর, বমি ও সারাক্ষণ গলা খুসখুস করার মতো বিরক্তিকর অনুভূতির মুখোমুখি হতে হয় এতে। ফ্যারিনজাইটিস হলে টনসিলের প্রদাহও দেখা দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভাইরাসের কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়। আবহাওয়ার পরিবর্তন, ধুলাবালির সংস্পর্শ, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বসবাসও এর জন্য দায়ী। 

ফ্যারিনজাইটিস কী?

ফ্যারিনজাইটিস হলো ফ্যারিংক্সে সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট প্রদাহ। তালু, আলজিভ ও গলার পেছন দিকের দেয়াল—এই পুরো অংশটিকে বলা হয় ফ্যারিংক্স। নানা কারণে অংশটি আক্রান্ত হতে পারে। ঠাণ্ডা লাগা ও ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ফ্যারিংক্সে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। ফ্যারিনজাইটিস একই সঙ্গে টনসিলের প্রদাহও তৈরি করে।

ফ্যারিনজাইটিস কেন হয়?

মূলত ভাইরাসজনিত ফ্যারিনজাইটিস বেশি হয়ে থাকে, যা থেকে পরে ইনফেকশন হতে পারে। সাধারণত অ্যাডেনো ভাইরাস, রাইনোভাইরাস ও রেসপিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাসের কারণে ফ্যারিনজাইটিস হয়। আবার স্ট্রেপ্টোকক্কাস হিমোলাইটিকাস, নন হিমোলাইটিক স্ট্রেপ্টোকক্কাস, নিউমোকক্কাস এবং হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়ার কারণেও ফ্যারিনজাইটিস হয়।

এছাড়া ঠাণ্ডা ও স্যাঁতসেঁতে রুমে গাদাগাদি করে বসবাস করা, তাপমাত্রার হঠাৎ পরিবর্তন, অতিরিক্ত ধুলাবালি ও দূষণযুক্ত পরিবেশে কাজ করা, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি কারণেও ফ্যারিনজাইটিস হতে পারে।

লক্ষণ ও উপসর্গ: 

 গলার ভেতরে খুসখুস করা

 খাবার ও ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া

 গলার স্বর বসে যাওয়া

 টনসিলের প্রদাহ হতে পারে, টনসিল ফুলে যেতে পারে

 প্রচণ্ড জ্বর ও বমি হওয়া

 শিশুদের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে কাঁপুনিও হতে পারে

 লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া

ফ্যারিনজাইটিস প্রতিরোধে করণীয়

 এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে কয়েকবার গড়গড়া করুন। গলা ব্যথা উপশমে এটি খুবই কার্যকর পদ্ধতি।

 ফ্রিজের ঠাণ্ডা খাবার, জল ও কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন। 

 গলা ব্যথায় লেবু চা খুবই উপকারী। সবসময় কুসুম গরম পানি পান করুন। গরম স্যুপ, গরম পানির সঙ্গে লেবু বা মধু মিশিয়ে খেলে বেশ আরাম পাবেন।

 ফ্যারিনজাইটিসে আক্রান্ত হলে কথা কম বলুন। চিৎকার বা উচ্চস্বরে কথা বলবেন না।

 শরীরে ঠাণ্ডা অনুভূত হলে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে গলায় একটি পাতলা মাফলার বা কাপড় হালকাভাবে পেঁচিয়ে নিলে আরাম পাওয়া যায়।

 চিকিৎসকের নির্দেশনা ছাড়াই ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাবেন না। এতে কিডনি রোগের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

 যত দ্রুত সম্ভব একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং সুচিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।


লেখক: কনসালট্যান্ট, ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫