প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, পেশাগত পরিকল্পনা ছাড়া যারা ডিগ্রি অর্জন করছে, শুধুমাত্র তারাই বেকার থাকছে। কোনো ধরনের পরিকল্পনা ছাড়াই কেউ সামাজিক বিজ্ঞান, ইংরেজি বা অন্য কোনো বিষয়ে গ্রাজুয়েট হলে সরকারের দায়িত্ব হয়ে গেল তাকে চাকরি দেয়া।
রোববার (৫ মে) রাজধানীর শেরাটন হোটেলে ‘ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ফর
স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তুমি যখন গ্রাজুয়েশন করছো, তখন
কেন ভাবোনি যে, আমি যে ডিগ্রি অর্জন করছি-সেটা দিয়ে আমি কী চাকরি করব, কোন পেশায় যাব।
সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র কিংবা উন্নয়নশীল দেশে ৮০ শতাংশ লোক গ্রাজুয়েশন করে না। তারা বিভিন্ন
ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করে।
সালমান এফ রহমান বলেন, পোশাক খাতের মতো উৎপাদনশীল জায়গায় আমাদের দক্ষ
শ্রমিকের অভাব আছে। কৃষিকাজের জন্য এখন লোক পাই না। আইসিটিতে যারা প্রশিক্ষিত তারা
কেউ বেকার থাকে না। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) কোনো ছাত্র বেকার থাকে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা কর দেয়
এনবিআর তাদের ওপর আরো করের বোঝা চাপায়। কিন্তু যারা কর দিচ্ছে না, তাদেরকে করের আওতায়
আনার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এখান থেকে বের হতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় হবে না, বরং কমবে।
অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ
আহমেদ পলক বলেন, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে গত ১৫ বছরে ব্যাপক পরিবর্তন হলেও এর সঙ্গে তাল
মিলিয়ে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স কিংবা কারিকুলাম পরিবর্তন করা হয়নি। ফলে আইসিটি
খাতে রফতানি বাড়েনি। এ ব্যর্থতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকেই (ইউজিসি) দায়ী
করেছেন মন্ত্রী।
আইসিটি খাত থেকে দুই বিলিয়ন ডলার আয়ে খুশি হলেও এ নিয়ে সন্তুষ্ট
নন দাবি করে মন্ত্রী বলেন, আগামী ৫ বছরে আইসিটি খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্য
নেয়া হয়েছে। ১০ বছর সমর্থন পেলে আইসিটি হবে দেশের প্রধান আয়ের খাত। তবে এআই ও সাইবার
সিকিউরিটি প্রযুক্তির মতো বিষয়ে দক্ষ জনসম্পদের রিসোর্স পুল গঠন করা না হলে আগামীতে
জনসম্পদ বেকার হয়ে পড়তে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আরো ডিজিটাল করার আহ্বান জানিয়ে তথ্য
ও প্রযুক্তি খাতে চলমান কর, নীতি সুবিধা আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও অব্যাহত রাখার দাবি
করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি
বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ, সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ
ও জারা জাবীন মাহবুব প্রমুখ।