নিরাপদ সীমান্ত গড়তে বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: এপ্রিল ২০, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও আলোকিত সীমান্ত গড়তে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের অধিনায়ক পর্যায়ে এক ব্যতিক্রমী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) নওগাঁ সীমান্তের খয়েরবাড়ি মাঠ নামক স্থানে বিজিবির পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন (১৪ বিজিবি) এবং বিএসএফ ১৩৭ ব্যাটালিয়ন, পতিরামের কমান্ডার পর্যায়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির ১৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের (১৪ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. হামিদ উদ্দিন। অপরদিকে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট বিএসএফ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বিএসএফ ১৩৭ ব্যাটালিয়ন, পতিরামের কমান্ড্যান্ট শুকভীর ধাংগার।

উল্লেখ্য, নওগাঁ সীমান্তের খয়েরবাড়ি এবং ভারতের ভুলকিপুর অধিক চোরাচালানপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। বিজিবি এবং বিএসএফ ক্যাম্প হতে সীমান্তবর্তী এই গ্রাম দুটি কিছুটা দূরে অবস্থিত হওয়ায় এবং সীমান্তের এ অংশে ভারতের কোনো কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় দুষ্কৃতকারীরা দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকাকে মাদকপাচার ও চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এলাকাটিকে মাদক ও চোরাচালান মুক্ত করতে বিজিবি-বিএসএফের অধিনায়ক পর্যায়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা, কৌশল নির্ধারণ এবং সে বিষয়ে সহযোগিতার ভিত্তিতে কিছু কার্যক্রম গ্রহণের ব্যাপারে যৌথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিজিবি ও বিএসএফের এ ব্যতিক্রমী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবি-বিএসএফের সমন্বয়ে উভয় দেশের জনগণকে মাদক ও চোরাচালান বিরোধী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করার বৃহত্তর কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শনিবার উভয় দেশের সাধারণ মানুষ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হয়।

বিজিবি ও বিএসএফ মনে করে, শুধুমাত্র নিরাপত্তামুলক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে এ এলাকাকে মাদক ও চোরাচালানমুক্ত করা সম্ভব নয়। প্রয়োজন উভয় দেশের স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা এবং সীমান্তবর্তী তৃণমূল জনগণের বৃহত্তর সহযোগিতা। সব পক্ষের সহযোগিতার মাধ্যমেই সীমান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের দৌরাত্ম্য দমানো সম্ভব।

বিজিবির পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল হামিদ উদ্দিন বলেন, মাদক পাচারকারীদের অন্ধকার জীবন থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিজিবি একটি মহতী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ উদ্যোগের মূল প্রতিপাদ্য হলো"আলোকিত গ্রাম, আলোকিত মানুষ ও আলোকিত সীমান্ত। সীমান্তবর্তী এলাকার স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে থাকবে বই-খাতা; তাদের চোখে-মুখে থাকবে রঙিন স্বপ্ন। সীমান্তবর্তী কৃষক, বেকার ও সাধারণ মানুষ তাদের জীবিকার জন্য মাদক পাচার বা চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নয়, বরং বেছে নেবে বিকল্প কোনো অর্থনৈতিক উপায়। সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে সীমান্তবর্তী মানুষের জীবন বদলে দেয়ার এ যুগান্তকারী উদ্যোগে বহুমুখী কার্যক্রম নিয়ে বিজিবি সবসময় আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে পাশে থাকবে। পাল্টে দেবার প্রতিশ্রুতিতে খয়েরবাড়ি গ্রামটি হয়তো হয়ে উঠবে বাংলাদেশের অন্যান্য সীমান্তবর্তী এলাকার জন্য অনুকরণীয় মডেল গ্রাম।

ভবিষ্যতে মাদক ও চোরাচালানমুক্ত আলোকিত সীমান্ত গড়তে উভয় দেশের সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে আরো বড় পরিসরে বিভিন্ন খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনার দৃঢ অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। একইসঙ্গে সীমান্তবর্তী জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান এবং নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত আলোকিত সীমান্ত গড়তে উভয় অধিনায়ক একসঙ্গে কাজের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পরিশেষে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠকটি শেষ হয়। 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫