হাওরে শুরু হয়েছে নতুন ধান কাটা

প্রকাশ: এপ্রিল ১৬, ২০২৪

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, সিলেট ও সুনামগঞ্জ

আবহাওয়া অনুকূল থাকায় সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষক। শ্রমিকের পাশাপাশি হারভেস্টার দিয়ে বোরো ফসল কাটছেন কৃষক। তবে হাওরের ৯০ শতাংশ জমির ফসল এখনো কাঁচা ও আধাপাকা অবস্থায় থাকায় পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিয়ে চিন্তিত কৃষক। গতকাল পর্যন্ত আট হাজার হেক্টর জমির ফসল কাটা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে সব ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, জেলার  ছোট-বড় শতাধিক হাওরে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় ধানের ফলন ভালো হওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ। জেলার মোট আবাদকৃত জমি থেকে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০০ টন ধান এবং ৯ লাখ ১৩ হাজার ৪৬৮ টন চাল উৎপাদন হবে। যার বাজারমূল্য ৪ হাজার ১১ কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে হাওরের পাকা ধান দ্রুত সময়ে ঘরে তুলতে সরকারিভাবে ৭০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে ৮৫০টি হারভেস্টার কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেছে কৃষি বিভাগ। পাশাপাশি ধান কাটা, মাড়াইসহ প্রক্রিয়াকরণে জেলা ও জেলার বাইরের প্রায় আড়াই লাখ শ্রমিক নিয়োজিত।

কৃষক জানান, গত সপ্তাহে টানা বৃষ্টিতে সদর উপজেলার দেখার হাওর ও কাংলার হাওরের শতাধিক হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি সপ্তাহে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এতে হাওরের কৃষকের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। পাহাড়ি ঢল, জলাবদ্ধতা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কবলে না পড়লে সময়মতো ধান গোলায় তুলতে পারবেন বলে জানিয়েছে কৃষক।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার বীরগাঁওয়ের সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘এবার বোরো ফসল ভালো হয়েছে। তবে মানুষ অতীত অভিজ্ঞতায় আতঙ্কে রয়েছেন। ধান গোলায় তুলতে পারলে তবেই কৃষকদের মনে শান্তি আসবে। প্রকৃতি যদি সহায় থাকে তাহলে হাওরে দ্রুতই ধান কাটা শেষ হবে।’

দেখার হাওরের কৃষক লুৎফুর রহমান বলেন, ‘এবার হাওরে ১০ বিঘা জমি চাষ করেছি। এখনো ধান পাকেনি। কাঁচা-আধাপাকা রয়েছে। বাঁধের পানির জলাবদ্ধতায় প্রায় পাঁচ বিঘা জমির ধান পানির নিচে। তবে এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। হাওরবাসীর প্রতি বছরই বন্যার আশঙ্কা থাকেই।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘১৬ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত হাওরে পুরোদস্তুর ধান কাট চলবে। এরই মধ্যে অনেক হাওরে ধান কাটছেন কৃষক। আমরা ভর্তুকি মূল্যে কৃষককে হারভেস্টার মেশিন দিয়েছি। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকের সঙ্গে যোগযোগ রাখছেন। ধান কাটার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলেও কৃষককে সহযোগিতা করা হবে।’

২০ এপ্রিল পর্যন্ত ভারি বৃষ্টির কোনো পূর্বাভাস নেই বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘এ সময় সুনামগঞ্জে ও উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এতে বন্যার আশঙ্কা নেই।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫