চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক নিলাম

রেকর্ড সর্বনিম্নে নেমেছে প্রতি কেজি চায়ের দাম

প্রকাশ: মার্চ ২৮, ২০২৪

সুজিত সাহা I চট্টগ্রাম ব্যুরো

দেশে চা উৎপাদন ও বিপণন মৌসুম শেষ হওয়ার কথা ছিল কয়েক সপ্তাহ আগে। বাড়তি উৎপাদনের ফলে মৌসুম দীর্ঘায়িত হলেও দাম নেমেছে রেকর্ড সর্বনিম্নে। সর্বশেষ চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক নিলামে চায়ের দাম ছিল ৯০ টাকায়, যা কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন নিলাম দর বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। 

দেশে চা নিলাম বাজার এখন তিনটি। চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক নিলাম ছাড়াও কয়েক বছর আগে শুরু হয় শ্রীমঙ্গল নিলাম। এছাড়া প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে পঞ্চগড়ে অনলাইন চা নিলাম বাজার। ২০২৩ সালে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চা উৎপাদন হওয়ায় নিলাম সংখ্যা বাড়িয়েছে চা বোর্ড। স্বাভাবিক সময়ে চট্টগ্রামে ৪৫-৪৬টি নিলাম অনুষ্ঠিত হলেও এ বছর বাড়তি চারটি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। 

সর্বশেষ ২৫ মার্চ অনুষ্ঠিত ৪৮তম চট্টগ্রাম নিলামে বিক্রির জন্য চা প্রস্তাব করা হয়েছে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯৭৮ কেজি। এসব চায়ের কেজিপ্রতি গড় দাম ছিল ৯০ টাকা। এর আগে ৪৭তম নিলামে চায়ের কেজিপ্রতি গড় দাম ছিল ৯৯ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ এক নিলামের ব্যবধানে চায়ের গড় দাম কমেছে প্রায় ১০ টাকা। মৌসুমের শেষার্ধে বাগানে মানসম্পন্ন চা উৎপাদন কমে যাওয়ায় দাম কমছে। যার কারণে নিলামে চায়ের দাম কমলেও চাহিদাও কমে অর্ধেকে নেমেছে বলে জানিয়েছেন ব্রোকার্স প্রতিষ্ঠান ও বাগান মালিকরা।

আগামী ১ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ৪৯তম নিলামেও বিক্রির জন্য চা প্রস্তাব করা হবে ৮ লাখ ৪৫ হাজার ৬৫৫ কেজি। ১৬ হাজার ৯৪৭ প্যাকেটে প্রস্তাবের অপেক্ষায় থাকা এসব চায়ের দাম আরো কমতে পারে বলে জানিয়েছেন চা খাতসংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, মৌসুম অনানুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলেও অনেক বাগানেই উৎপাদন বন্ধ। আসন্ন বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে বাগানগুলোয় চা গাছের উপরিভাগ কেটে নতুন মৌসুমের প্রথম চা সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যেসব বাগান এখনো সংস্কার হয়নি, সেগুলো থেকে স্বল্প পরিসরে উৎপাদিত চা এবং মৌসুমের বিভিন্ন সময়ে নিলামে অবিক্রীত চা নতুন করে পাঠানো হচ্ছে। 

বাগান মালিকরা বলছেন, মৌসুমের শেষ দিকে বিশেষত উত্তরাঞ্চলের সমতলের চায়ের সরবরাহ বেশি থাকে। এসব চায়ের দাম তুলনামূলক কম থাকায় রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো কিনে নিয়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি করে। আবার কিছু নন-ব্র্যান্ড ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান চা ব্লেন্ডিংয়ের প্রয়োজনে মৌসুমের শেষ দিকে চা সংগ্রহ করে। এ বছর নিলামের শেষ দিকে চায়ের দাম কমে যাওয়ায় বছরব্যাপী সার্বিক চায়ের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তারা। 

চায়ের দাম কমে যাওয়ার বিষয়ে ন্যাশনাল ব্রোকার্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক অঞ্জন দেব বর্মণ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নিলামের শেষ দিকে চায়ের দাম কমে যায়। তবে এ বছর বাড়তি চা উৎপাদনের কারণে নিলাম সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। শেষ দিকে নিলাম থেকে অপেক্ষাকৃত কম মানসম্পন্ন চায়ের সরবরাহ হয় বেশি। যার কারণে চায়ের দামও কম।’ এখন চায়ের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম কমলেও দেশের সার্বিক চায়ের বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন তিনি।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫