শাহানূর মামুনের ‘এক্সট্যাসি অ্যান্ড মেলানকলি’

প্রকাশ: মার্চ ২৭, ২০২৪

ফারিহা আজমিন

চিত্রশিল্পী শাহানূর মামুনের ষষ্ঠ একক শিল্প প্রদর্শনী ‘এক্সট্যাসি অ্যান্ড মেলানকলি’ শেষ হয়ে গেল উত্তরার ‘কায়া’য়। ১ মার্চ শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিল্পী অধ্যাপক হামিদুজ্জামান খান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। শাহানূর সাধারণত জলরঙ দিয়েই বেশি ছবি আঁকেন। এ রঙের আলাদা বিশেষত্ব আছে তার কাছে। শিল্পীরও ব্যক্তিগত পছন্দ জলরঙ। তিনি বলেন, ‘জলরঙের সঙ্গে সম্পর্কটা শৈশব থেকে। প্রতিটি মানুষেরই কিছু ভালোলাগা থাকে ছোটবেলা থেকেই। ঠিক যেমন গান করতে, নাচ করতে কিংবা ছবি আঁকতে একটি নিজস্ব ধরন ও ভালোলাগার ছাপ রয়ে যায়। আমার কাছেও জলরঙটা তাই। যতদিন ছাত্র ছিলাম, প্রায়ই জলরঙ নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বসে যেতাম। ছবি আঁকতাম।’

শাহানূর মামুনের জন্ম ময়মনসিংহ শহরে। তাই তার ছবির ল্যান্ডস্কেপ ব্রহ্মপুত্র নদকে ঘিরেই। এজন্যই তিনি দাবি করেন, নদ-নদীই তার শিক্ষক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরামিক বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তাই পেইন্টিং নিয়ে তার সে অর্থে পড়া হয়নি। তবে জলরঙ নিয়ে তার ভাবনা শৈশব থেকেই সঙ্গে রয়ে গেছে। সেদিকে ইঙ্গিত করেই তিনি বলেন, ‘জলরঙের বিশেষত্ব হচ্ছে এর প্রতিক্রিয়া খুবিই সেনসিটিভ। এ যেন নারীর মতো। যার সঙ্গে আমার রোম্যান্স, আমার ভালো লাগা। পাওয়া না-পাওয়ার শঙ্কা আছে যেখানে। কারণ কখনো চাইলেই আপনি আগে থেকে ভাবতে পারবেন না শেষ পর্যন্ত রঙটি ক্যানভাসে বসবে কিনা।’

জলরঙ এমন একটি রঙ, যা জলে মিশে কেমন বর্ণ ধারণ করবে তা বলা মুশকিল। তিনি অনেক কাজ করেছেন এখন পর্যন্ত। ভালোলাগার আরো একটি দিক হলো জলরঙ প্রকৃতিকে খুব ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলে। এবারের আয়োজনে শিল্পীর প্রায় ৮০টি চিত্রকর্মের প্রদর্শনীর হয়েছে। সেখানে যে কেবল জলরঙে আঁকা ছবি ছিল এমন নয়। চারকোল, কলম, কালি, অ্যাক্রিলিক রঙের ব্যবহারও ছিল। শাহানূর মামুনের বেশির ভাগ ছবিই আউটডোরে বসে আঁকা। তিনি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে প্রকৃতি থেকে অনুপ্রাণিত বলেই মনে করেন। তার ভাষায় ‘প্রকৃতির অনেক গল্প আছে, আমার অনেক ভালোলাগা কাজ করে এ বিষয়গুলো নিয়ে। ল্যান্ডস্কেপকে বলা হয় অনেক গল্পের সমাহার। ভিঞ্চির মোনালিসা নিয়েই যদি বলি, সেখানে শুধু মোনালিসাই ছিল না। তার পেছনে পাহাড় ও নদীর ছবিও আঁকা আছে। তাই ল্যান্ডস্কেপের অনেক গল্প থাকে।’ 

শাহানূর মামুনের ইচ্ছা, তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন এ জলরঙ, ক্যানভাস নিয়ে আউটডোরেই ঘুরে বেড়াবেন। তিনি প্রকৃতির ছবি আঁকতে চান। সে ইচ্ছারই বহিঃপ্রকাশ ‘কায়া’র প্রদর্শনী। ১৫ দিনব্যাপী কায়ায় অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীতে কেবল ছবিগুলোর প্রদর্শনীই হয়নি, পাশাপাশি দর্শক নিজেদের পছন্দের ছবিটি কিনতেও পেরেছেন। শিল্পী জানিয়েছেন, প্রায় অর্ধেকসংখ্যক ছবিই বিক্রি হয়েছে প্রদর্শনী থেকে। পুরো প্রদর্শনীর অভিজ্ঞতা নিয়ে শিল্পী বলেছেন, ‘অনেক বেশি দর্শকের ভিড় ছিল এবং অনেক দূর-দূরান্ত থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা এসেছিল। তবে আমি সবচেয়ে বেশি খেয়াল করি যখন আমার কোনো ছবি দেয়ালে টানানো আছে এবং সেটিকে একজন তরুণ কীভাবে দেখছে। তরুণদের ভাবনা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫