ইতিহাসবিদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক
আবদুল মমিন চৌধুরী মারা গেছেন। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর লালমাটিয়ায় নিজ বাসভবনে
তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।
আবদুল মমিনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। লালমাটিয়া সি ব্লক মসজিদ প্রাঙ্গণে
বাদ জুমা তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে।
দীর্ঘ কর্মজীবনে অধ্যাপনার পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক,
কলা অনুষদের ডিন, সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন
করেন অধ্যাপক চৌধুরী। তিনি স্বনামধন্য বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে
যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব
পালন করেছেন। ২০০১-০৪ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ছিলেন। ২০১৪
সালে তিনি এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলো মনোনীত হন।
এ ছাড়াও অধ্যাপক চৌধুরী ২০০১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০০৩ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের
দায়িত্ব পালন করেন।
আব্দুল মমিন চৌধুরী ১৯৪০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবদুল ওয়াদুদ
চৌধুরী এবং মাতা শিরিন বেগম। তিনি ১৯৫৪ সালে ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৬ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইতিহাস বিভাগ থেকে ১৯৫৯ সালে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৬০ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৬৫ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান
স্টাডিজ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি ১৯৭৫-৭৬ সালে কমনওয়েলথ ফেলোশিপ নিয়ে
পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণাও সম্পন্ন করেন। ২০১৩-১৪ সালে তিনি সিনিয়র ফুলব্রাইট ফেলো হিসেবে
যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভিজিটিং স্কলার হিসেবে
গবেষণা করেন।
আবদুল মমিন চৌধুরী ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে টিচিং
ফেলো হিসেবে যোগদান করার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরের বছর প্রভাষক পদে উন্নীত
হন। একই বিভাগে ১৯৬৫ সালে সহকারী অধ্যাপক, ১৯৭০ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৭৮ সালে
অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৩ সালে তিনি ইতিহাস বিভাগ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।