হার্নিয়া

কারা বেশি ঝুঁকিতে? চিকিৎসা কী?

প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৪

ডা. মো. সায়েফউল্লাহ

হার্নিয়া হলো পেটের দেয়ালের ছিদ্রজনিত রোগ। এ রোগে আক্রান্ত হলে পেটের অভ্যন্তরের অন্ত্র বা নাড়িভুঁড়ি বাইরের দিকে বেরিয়ে আসে। পেটের দেয়ালের বিভিন্ন অংশে এ রকম ছিদ্র দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে নাভি, কুঁচকি ও পেটে সার্জারির ক্ষতস্থানে হার্নিয়া বেশি হয়ে থাকে। লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে পেটে ভার ভার অনুভূতি, ঝুঁকে ভারী কিছু তুলতে গেলে পেটে ব্যথা, মলত্যাগে সমস্যাসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে সমস্যা আরো বড় আকার ধারণ করতে পারে। 

কারা আছেন বেশি ঝুঁকিতে?

শিশু:

জন্মগতভাবে শিশুর নাভি বা কুঁচকির অংশের পেটের দেয়ালে ছিদ্র বা ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। এ ধরনের হার্নিয়াকে বলা হয় কনজেনিটাল হার্নিয়া। 

বয়স্ক ব্যক্তি:

বয়স বেড়ে গেলে শরীরের অঙ্গগুলো দুর্বল হয়ে যায়। এ সময় পেটের দেয়ালের পেশিতেও দুর্বলতা দেখা দেয়। ফলে বয়স্ক ব্যক্তিদের হার্নিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। সাধারণত নাভির নিচের অংশের দেয়াল ওপরের অংশের চেয়ে বেশি দুর্বল হয়ে থাকে। তাই এই জায়গাগুলোতে অন্ত্র বা নাড়িভুঁড়ি পেটের দেয়াল ছিদ্র করে বাইরের দিকে বেরিয়ে আসতে পারে। 

সার্জারি বা সিজারের পর:

পেট কেটে কোনো ধরনের সার্জারি করা হলে সেখানের মাংসপেশি অন্য অংশের চেয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল হয়ে যায়। ফলে পেটের দেয়ালের এই দুর্বল অংশ দিয়ে অন্ত্র বাইরের দিকে বেরিয়ে আসতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে সিজারের পর এ ধরনের হার্নিয়া বেশি দেখা যায়। 

হার্নিয়া রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি

হার্নিয়ার চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা ভালো। পেটের মাংসপেশিতে ফোলা ভাব দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। হার্নিয়ার চিকিৎসায় আগে ওপেন সার্জারি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে অত্যাধুনিক ল্যাপারোস্কপি পদ্ধতিতে পেটে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র করে অন্ত্রগুলোকে আগের অবস্থায় প্রতিস্থাপিত করা হয় এবং পেটের দেয়ালে একটি জালি বসিয়ে দেয়া হয় যাতে অন্ত্রগুলো দেয়াল ভেদ করে পুনরায় বাইরে বের হয়ে আসতে না পারে। 

সার্জারির পর করণীয়:

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। 

কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে অবহেলা না করে চিকিৎসা নেয়া। মলত্যাগে যেন পেটে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। 

প্রস্রাবের বেগ অনিয়ন্ত্রিত হলে চিকিৎসা নিতে হবে। প্রস্রাবের সময় পেটের ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ না করা।  

দীর্ঘস্থায়ী হাঁচি-কাশি থাকলে দ্রুত চিকিৎসা নেয়া।  

অতিরিক্ত ভারী জিনিস উত্তোলন না করা। 

ধূমপান পরিহার। 

লেখক: এফসিপিএস (সার্জারি)

জেনারেল, ল্যাপারোস্কপিক, কোলোরেক্টাল ও

ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ও সার্জন

সহযোগী অধ্যাপক

ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫