ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস

পড়ার বিষয় যখন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস

প্রকাশ: জানুয়ারি ০১, ২০২৪

শফিকুল ইসলাম

মানুষের পেশাগত কাজের অভিজ্ঞতায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে প্রযুক্তি। ভেঙে দিয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতার বন্ধন। মানুষকে করেছে আগের চেয়ে আরো বেশি বিশ্লেষণী ও অনুসন্ধানী। সংযুক্ত করেছে বিশ্ববাজারের সঙ্গে। বৈশ্বিক ল্যান্ডস্কেপ ক্রমাগত বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ীরা সর্বত্র নতুন সুযোগের অনুসন্ধান করছেন। 

যুক্তরাজ্যের ওয়ারউইক ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসের কোর্স ডিরেক্টর মেহমেত চাক্কলের মতে, ‌একটি কোম্পানির সাফল্যের কেন্দ্রবিন্দু আন্তর্জাতিক ব্যবসা। আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বিশ্ব অনেক বেশি কানেক্টেড। শুধু বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ধরে রাখতে নয়, বরং ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোগ (এসএমই) টিকিয়ে রাখতেও তাদের জানতে হয় কীভাবে বিদেশে বাণিজ্য ও ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়। 

আন্তর্জাতিক ব্যবসায় অধ্যয়ন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা দেবে। শেখাবে কীভাবে বিশ্বায়ন বিভিন্ন দেশে ব্যবসা, বাজার, মানুষ এবং তথ্যের কানেক্টিভিটির মধ্য নিয়ে এসেছে। এ সেক্টরে সফল হওয়ার জন্য একজন গ্র্যাজুয়েটকে একটি বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হয়। এখন এমন বৈশ্বিক সুযোগ তৈরি হয়েছে যেখানে আন্তর্জাতিক ব্যবসায় ১১ দশমিক ৫ মিলিয়নেরও বেশি লোক কাজে অংশ নিচ্ছেন। বাণিজ্য সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে এ সেক্টরে বাড়ছে দক্ষ জনবলের চাহিদাও। 

যুক্তরাজ্যের ক্যারিয়ারভিত্তিক সর্ববৃহৎ ওয়েবসাইট প্রসপেক্টের তথ্যমতে, চীন, জাপান, ভারত, কানাডা ও দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি বিশ্বের শীর্ষ ১০-এর মধ্যে রয়েছে (যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ, নবম এবং দশম)। সিংহভাগ মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাইরে। আর এ প্রবণতা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া ও মেক্সিকো শীর্ষ ১৫তে অবস্থান নিতে খুব বেশি পিছিয়ে নেই। ডিজিটাল বিশ্বে ব্যবসা পরিচালিত হয় বিশ্বব্যাপী। প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতাপূর্ণ হওয়ায় আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম বোঝা ও পরিচালনায় দরকার দক্ষ গ্র্যাজুয়েট। আন্তর্জাতিক ব্যবসায় স্নাতক কোর্স বিশ্বের বিভিন্ন ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনার অনুশীলন সম্পর্কে বোঝার সুযোগ তৈরি করে দেয় এবং বিশ্বব্যাপী ব্যবসায় নিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ারের জন্যও তাদের প্রস্তুত করে। 

বিশ্ব এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হওয়ায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত এমন গ্র্যাজুয়েটদের সন্ধান করছে যারা আন্তঃসাংস্কৃতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারেন এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে স্থানীয়ভাবে ব্যবসার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবেন। একজন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস গ্র্যাজুয়েটের কাজের সুযোগ রয়েছে অনেক সেক্টরেই। যেসব পদে দেশে-বিদেশে কাজের সুযোগ রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার, ডাটা সায়েন্টিস্ট, এক্সটার্নাল অডিটর, ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেডার, হিউম্যান রিসোর্সেস অফিসার, মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ, সেলস এক্সিকিউটিভ, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজার, কমপ্লায়েন্স অফিসার, কস্টস লয়ার, ডিজিটাল মার্কেটার, ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজার, ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট, মিডিয়া প্ল্যানার, পাবলিক অ্যাফেয়ার কনসালট্যান্ট, রিক্রুটমেন্ট কনসালট্যান্ট ইত্যাদি। 

এছাড়া ব্যাংক অফিসার, অ্যাডভার্টাইজমেন্ট ম্যানেজার, মার্কেটিং ম্যানেজার, পলিসি অ্যানালিস্ট, প্রকিউরমেন্ট ম্যানেজার, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং অ্যানালিস্ট, বিজনেস অ্যাডভাইজর, বিজনেস অ্যানালিস্ট, ফাইন্যান্স ম্যানেজার, ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রেডার, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ম্যানেজার, এক্সিকিউটিভ অফিসার, এফবিসিসিআইসহ অন্যান্য ট্রেড চেম্বারে ট্রেইনি অফিসার, ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ। এছাড়া বিভিন্ন শিল্প-কারখানা ও সংস্থা আন্তর্জাতিক ব্যবসায় ডিগ্রিধারী গ্র্যাজুয়েটদের নিয়োগ করে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কনসালট্যান্সি ফার্ম, প্রযুক্তি এবং কম্পিউটার কোম্পানি, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ রয়েছে। একটি বিদেশী ভাষা শেখা বা বিদেশে ইন্টার্নশিপ অভিজ্ঞতা থাকলে সেসব গ্র্যাজুয়েটের জন্য উপকারে আসবে যারা একদিন বিদেশে কাজ করতে চান।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের চাহিদার কথা তুলে ধরে ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক বলেন, ‘‌পৃথিবী এখন বিশ্বায়িত। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি পণ্য ও সেবা কোনো না কোনোভাবে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সুতরাং এ বাজারের জন্য দক্ষ জনবল প্রয়োজন। এজন্য ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ভূমিকা অনস্বীকার্য।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫